Posted by : Md:Joy Chowdhury Aug 20, 2013

প্রতিদিন ৭ খদ্দেরকে সন্তষ্ট করতে না পারলে খাবার দেয়া হতো না। গায়ের কাপড় খুলে নেয়া হতো। থাকতে হত উলঙ্গ। এছাড়া নির্যাতন তো আছেই। দু’বছর ধরে আটকে রেখে চাপের মুখে যৌন লালসার শিকার হতে বাধ্য করা হতো। এমনই লোমহর্ষক খবর পাওয়া গেছে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে এক মিনি যৌনপল্লী থেকে।

এই কিশোরী বন্দিদশা থেকে উদ্ধার পেয়ে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে এি নির্যাতনের বীভৎস কাহিনী বর্ণনা করে। পুলিশ সেখান থেকে আটক করেছে মা-ছেলেকে।

গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরের অদূরে কুঠিবাড়ি ব্রিজের পাশেই মোয়াজ্জেম নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে গড়ে উঠেছে এই মিনি যৌন পল্লী। তার স্ত্রীর নাম বেলী বেগম। ছেলে বেলাল হোসেন বাধ্যগত পুত্র। বাড়ির সবাই বেকার। তাদের নিজের কোন পেশা ছিল বা আছে বলে এলাকার লোকজন জানে না। তবে আশপাশের বাড়ির লোকজন তাদের সন্দেহের চোখে দেখতেন। তারা বলেন, মেয়াজ্জেম হোসেনের বাড়ি থেকে মাঝে মধ্যে মেয়েদের চিৎকার শুনতে পাওয়া যায়। আবার থেমে থেমে মারপিট ও কান্নাকাটি। তারপর দিনরাত বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মাস্তানদের আনাগোনা। তার মধ্যে পুলিশ ও পোশাকধারী লোকজনের যাতায়াত ছিল। এ কারণে এলাকার লোকজন বিষয়টি নিয়ে ভয়ে বেশি দূর এগোয়নি।

কিন্তু ওই বাড়ি থেকে ডলি নামের এক মেয়ে পালিয়ে যৌন নির্যাতনের এই কাহিনী ফাঁস করে দেয়। ওই কিশোরীর মুখে নির্যাতনের বর্ণনা শুনে এলাকার লোকজনের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়। এলাকার লোকজন জানতে পারে যে বাড়ির মালিক মোয়াজ্জেম ও তার স্ত্রী বেলী বাড়িতে নারী ব্যবসা করতো। তারা বিভিন্ন স্থান থেকে কিশোরী মেয়েদের ফুঁসলিয়ে নিয়ে আসতো। চাকরি দেয়ার কথা বলে, এমনকি বিয়ে ও টাকার প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরী মেয়েদের নিয়ে আসতো বাড়িতে। তারপর বাড়িতে আটকে রেখে তাদের দিয়ে দেহ ব্যবসা চালানো হতো। ডলির এসব কাহিনীর পর ওইদিন বিক্ষুব্ধ লোকজন মোয়াজ্জেম হোসেনের মিনি পতিতালযে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। গোবিন্দগঞ্জ পুলিশের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া দলদলিয়া এলাচের ঘাট গুচ্ছগ্রামের এক কিশোরী মেয়ে দু’বছর আগে তার বাড়ি থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান মেলেনি। সমপ্রতি সাঘাটা উপজেলার ফল ব্যবসায়ী ফজলু মিয়া (৩৮) ফেরি করে ফল বিক্রি করতে যান গোবিন্দগঞ্জে কুঠিবাড়িতে। ফজলু মিয়া প্রতিবেশী হিসেবে আগে থেকেই ওই কিশোরীকে চিনতেন। মোয়াজ্জেম হোসেনের বাড়িতে তিনি দেখতে পান তাকে। তারপর সাঘাটায় ফিরে গিয়ে হারিয়ে যাওয়া ওই কিশোরীর মা ও বাবাকে জানান।

খবর পেয়ে শনিবার বিকালে কিশোরীর মা ফজলু মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ছুটে আসেন গোবিন্দগঞ্জে। ঘটনার বর্ণনা করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ ও ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন ফকুর কাছে। তারপর পুলিশের সহায়তায় হানা দেয়া হয় ওই কুঠিবাড়ির মোয়াজ্জেমের বাড়িতে। দু’বছর পর বন্দিদশা থেকে উদ্ধার করা হয় কিশোরীকে। বাবা-মাকে কাছে পেয়ে মেয়ে কিশোরী তার সর্বনাশের কথা খুলে বলে। তার উপর পৈশাচিক নির্যাতনের কথা বর্ণনা করে পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে। সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বেলাল হোসেন ও তার মা বেলী বেগমকে। তবে সটকে পড়ে নাটের গুরু মোয়াজ্জেম হোসেন। গ্রেপ্তারকৃতরা পুলিশের কাছে তাদের অপকর্মের কথা স্বীকার করে বলে তারা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কিশোরী মেয়েদের ফুঁসলিয়ে নিয়ে এসে দেহব্যবসায় বাধ্য করতো। তাদের অনেকের মধ্যে ওই কিশোরীও ছিল। তবে তার খদ্দের কারা ছিল তাদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হয়নি। এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ থানায় মোয়াজ্জেম হোসেনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। - মানবজমিন

Leave a Reply

Subscribe to Posts | Subscribe to Comments

- Copyright © Personal Blog - Tips Guru - Powered by Md Joy - Designed by Md Joy Chowdhury -