Posted by : Md:Joy Chowdhury May 10, 2015

মসলাপাতি রান্নায় যেমন অপরিহার্য, তেমনি ভেষজে অনন্য। বিভিন্ন মসলার ভেষজ গুণ বিভিন্ন। এগুলো জেনে ব্যবহার করলে অনেক প্রকার রোগের হাত থেকে সহজে রক্ষা পাওয়া যায়। তেমনি কালোজিরা; বরং এটি মসলা কেন, সব ভেষজের সেরা। ইসলামি মতে, কালোজিরায় মৃত্যু ছাড়া সব রোগের উপশম রয়েছে। তাই কালোজিরাকে মসলার সাথে সাথে ভেষজ হিসেবে ব্যবহার করে অল্প পয়সায় অনেক বেশি উপকার লাভ করা যায়।


কালোজিরা গুণে তিক্তরসধারী, উগ্র সুগন্ধযুক্ত, ক্ষুধা বৃদ্ধিকারক, পেটের বায়ুনাশক ও মূত্রকারক। এটি উদরি বা ফুসফুসজনিত রোগে উপকারী। এ ছাড়া কৃমির উপদ্রব নিবারণের জন্যও এটি ব্যবহৃত হয়। কেউ কেউ কাশি ও জন্ডিসে এটি সেবনের কথা বলেন। ইউনানি মতে, এটি বিরেচক ও অর্শ্বে হিতকর। তা ছাড়া প্রসূতীর দুধ বাড়ায় এটির ব্যবহার রয়েছে। এর ব্যবহারবিধি নিচে দেয়া হলো :


১.স্তন্যস্বল্পতা : পেটে আমদোষ থাকলে অথবা শরীরের রসধাতু শুকাতে থাকলে স্তন্য কমে যায়। এ সময় কালোজিরা সামান্য ভেজে গুঁড়ো করে ৫০০ মিলিগ্রাম হারে ৭-৮ চা চামচ দুধে মিশিয়ে ওই মাত্রায় সকালে ও বিকেলে সাত দিন ধরে খেলে উল্লেখযোগ্য ফল পাওয়া যায়।


২.মাসিক ঋতু : যেসব মহিলা অনিয়মিত অথবা স্বল্প অথবা অধিক স্রাবের জন্য কষ্ট পেয়ে থাকেন, তাদের ঋতু হওয়ার পাঁচ-সাত দিন আগে থেকে ৫০০ মিলিগ্রাম হারে সামান্য গরম এমন পানিসহ সকালে ও বিকেলে খেতে হয়। তার পরও অসুবিধা থেকে গেলে পরপর ২-৩ মাস ওভাবে খেতে হবে।


৩.বাধক দোষ : এ দোষ হলে মেয়েরা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে, কেউবা আত্মসুখে তৎপর থাকে, কেউবা শূচীবায়ুগ্রস্ত হয়, কারো কারো দেহটা স্থূল হয়ে যায় আবার কখনো বা তা হয় না। আবার সবাই যে শুকিয়ে যাবে, তাও নয়। কিন্তু মনের ওপর এ রোগের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এর ফলে কেউ কেউ কামজ উন্মাদ রোগেও আক্রান্ত হয়। আবার এ দোষে কোনো কোনো মহিলা জননগ্রন্থির ক্রিয়াশক্তি হারিয়ে ফেলে। সেই সাথে আরো অনেক উপসর্গ এসে জোটে। এ ক্ষেত্রে কালোজিরা সামান্য ভেজে নিয়ে গুঁড়ো করে সকালে ও সন্ধ্যায় ৭৫০ মিলিগ্রাম মাত্রায় খেতে হয় এবং তা মাসিকেও খেতে হবে। এভাবে ২-৩ মাস খেলে রোগের উপশম হবে।


৪.গর্ভাশয়ের দ্বার সঙ্কোচন : প্রসবের পর কালোজিরার ক্বাথ খেলে গর্ভাশয়ের দ্বার সঙ্কুচিত হয় এবং সেই সাথে স্তন্য বাড়ে।


৫.কক্টরজ ও ঋতুরোধ : অল্প মাত্রায় কালোজিরা মেয়েদের ঋতুস্রাব বাড়ায়, কষ্টরজ ও ঋতুরোধ অসুখ সারায়। তবে বেশি মাত্রায় খেলে গর্ভস্রাব হয়।


৬.মাথায় যন্ত্রণা : কাঁচা সর্দি হয়ে মাথায় যন্ত্রণা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কালোজিরা পুঁটলিতে বেঁধে শুঁকতে হবে। তবে পুঁটলিতে নেয়ার আগে তা রগড়ে নিতে হবে। তাতে গন্ধ বের হয় এবং উপকার হয়। তা ছাড়া সির্কাতে ভিজিয়ে শুঁকলেও মাথাব্যথা সারে।


৭.মাথায় সর্দি বসা (শ্লেষ্মা বসে যাওয়া) : এ অবস্থায় কালোজিরা বেটে কপালে প্রলেপ দিলে ও মিহি গুঁড়োর নস্যি নিলে উপকার হয়।


৮.নতুন সর্দি : এ অবস্থায় কালোজিরার নস্যি নিলে উপকার মেলে।


৯.চুলকানি : কালোজিরা ভাজা তেল গায়ে মাখলে চুলকানিতে উপকার হয়। এতে ১০০ গ্রাম সরষের তেলে ২৫-৩০ গ্রাম কালোজিরা ভেজে সে তেল ছেঁকে নিয়ে ব্যবহার করতে হয়।


১০.বিছের হুলের জ্বালা : কালোজিরা বেটে তা লাগিয়ে দিলে অল্প সময় পরই হুলের জ্বালা কমে যায়।


১১.গলা ফোলা : সর্দি-কাসির দোষে গ্লান্ড ফুলেছে, সে ক্ষেত্রে কালোজিরা, চাল পোড়া, মুসাববর সমান পরিমাণে নিয়ে বেটে প্রলেপ দিলে এক দিনের মধ্যে ফোলা ও ব্যথা উভয়ই উপশম হয়।


১২.শোথ : পানিতে কালোজিরা বেটে প্রলেপ দিলে হাত-পা ফোলাসহ সব শোথ কমে।


১৩.দাঁতের ব্যথা : গরম পানিতে কালোজিরা নিয়ে তা দিয়ে কুলি করলে দাঁতের ব্যথার উপশম হয়।


১৪.দাদ : কালোজিরা বেটে প্রলেপ দিলে এসবে উপকার হয়। তা ছাড়া ওপরে উল্লিখিত চুলকানির নিয়মে দিলে আরো ভালো হয়।


১৫.ধবল : কালোজিরা বেটে প্রলেপ দিলে এসবে উপকার হয়। তা ছাড়া ওপরে উল্লেখিত চুলকানির নিয়মে দিলে আরো ভালো হয়।


১৬.নতুন চুল গজানো : কালোজিরা বেটে নিয়ে মাথায় অনেক দিন ধরে মালিশ করলে নতুন চুল গজায়।


১৭.লাবণ্য : ঘিয়ের সাথে মিশিয়ে খেলে মুখ উজ্জ্বল হয় ও রং ফর্সা হয়।


১৮.সন্তান প্রসব : কালোজিরা পানিতে সিদ্ধ করে খেলে সন্তানের প্রসব তাড়াতাড়ি হয়।


১৯.কৃমি : ভিনেগারে ভিজিয়ে কালোজিরা খেলে কৃমি নষ্ট হয়।


২০.স্মৃতিভ্রংশ : স্মৃতিভ্রংশ ও স্মরণশক্তির দুর্বলতায় কালোজিরা খুব কার্যকর। ৩ গ্রাম কালোজিরা ২০ মিলিলিটার বিশুদ্ধ মধুসহ চাটলে এ রোগ সারে।
২১.প্রস্রাবের বাধকতা : পরিমাণমতো কালোজিরা খেলে প্রস্রাব পরিষ্কার হয়ে যায়।
 
২২. শূল ব্যথা, বুকের ব্যথা, বমনেচ্ছা : কালোজিরা বেটে খেলে এসব রোগ সারে। সেই সাথে বাটা গায়েও মালিশ করতে হয়।

জন্ডিস, প্লীহাবৃদ্ধি, রোগেও ভাল উপকার পাওয়া  যায়।

Leave a Reply

Subscribe to Posts | Subscribe to Comments

- Copyright © Personal Blog - Tips Guru - Powered by Md Joy - Designed by Md Joy Chowdhury -