তোতলামো, হামজ্বর ও এলার্জি প্রতিরোধে হলুদ বড়ই উপকারী
হলুদ স্বাস্থ্য সচেতনায় বিশেষ ভূমিকা রাখে। হলুদের বহুবিধ গুণাগুণ রয়েছে। আজ হলুদের গুণাগুণ আপনাদের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে।
প্রতিদিনের রান্নায় হলুদের ব্যবহার অন্তহীন। খাবারকে বর্ণময় করে আকর্ষণীয় করার জন্যই হলুদ মূলত ব্যবহার হয়। তবে এর স্বাস্থ্যগত উপকারীতাও অনেক।
হলুদ পরিমিত মাত্রায় ব্যবহার করলে শিশুরা চর্মরোগে আক্রান্ত হয় না। এ কারণে গ্রামাঞ্চলের মায়েরা মাঝে মধ্যেই শিশুদের তেল-হলুদ মাখিয়ে গোসল করিয়ে থাকেন। শিশুদের কৃমি বিনাসের জন্য হলুদের ওষুধ দিয়ে থাকেন ভেশজবীদরা।
# কাঁচা হলুদের রস বয়স অনুপাতে প্রযোজ্য পরিমাণে (সর্বোচ্চ ২০ ফোটা) লবণ মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে কৃমি বিনষ্ট হয়।
# শিশুদের তোতলামি কাটিয়ে ওঠার জন্য হলুদ খাওয়ানো হয়। কথা বলতে গিয়ে আটকে গেলে কিন্বা তোতলামো থাকলে হলুদের গুড়া গাওয়া ঘি-এ ভেজে চেটে চেটে খেতে হয়। তবে বেশি পরিমাণ খাওয়া যাবে না। ২/৩ গ্রাম হলুদ এক চা চামচ আন্দাজ ঘি-এর সঙ্গে ভাজতে হবে।
# হামজ্বর হলে কাঁচা হলুদ শুকিয়ে গুড়ো করে উস্তা পাতার রস ও অল্প মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হয়। এতে হামজ্বর দ্রুত সেরে যায়।
# চিংড়ি মাছ, গরুর মাংস কিন্বা হাসের ডিম খেলে অনেকের শরীরে এলার্জি দেখা দেয়। শরীরের একাধিক অংশ চাকা হয়ে ফুটে ওঠে। এক্ষেত্রে নিম পাতার গুড়ার সঙ্গে দ্বিগুণ পরিমাণে কাঁচা হলুদের গুড়া এবং তিন গুণ পরিমাণ আমলকির গুড়া একসঙ্গে মিশিয়ে চা চামচ পরিমাণ প্রতিদিন খেতে হয়। তবে প্রায় ১৫ দিন খালি পেটে খেতে হবে। এতে এলার্জি কমে যাবে ৯০ ভাগ। তবে এলার্জি যদি না কমে তাতে শরীরের কোন ক্ষতি হবে না।
# একটি পরিবারে চোখ ওঠা শুরু হলে পর্যায়ক্রমে সকলেরই চোখ ওঠে। এতে হলুদ দিয়ে খুব সহজেই এই রোগের চিকিৎসা করা যায়। হলুদ থেতলে সেই রস নিয়ে পানিতে মেশাতে হয়। তারপর সেই পানি পরিষ্কার রুমাল ভিজিয়ে নিয়ে চোখ মুছতে হয়। তাতে দ্রুত চোখ ওঠা সেরে যায় এবং চোখের লাল ভাবও কেটে যায়।
# জোঁক ধরলে বা শরীরের কোন স্থানে হাড় মচকে গেলে হলুদ বাটা কিন্বা হলুদ গুড়া দিতে হয়। মচকানো স্থানে হলুদ এবং লবণ মিশিয়ে দিলে মচকানো ব্যথা দ্রুত কেটে যায়।
# রূপচর্চায় হলুদের ব্যবহার রয়েছে। কাঁচা হলুদের রস খেলে ত্বক সুন্দর থাকে। কাঁচা হলুদ ও নিমপাতা বেটে মুখে লাগালে ব্রণ সারে এবং মুখের স্ক্রীণ ভালো থাকে।
প্রতিদিনের রান্নায় হলুদের ব্যবহার অন্তহীন। খাবারকে বর্ণময় করে আকর্ষণীয় করার জন্যই হলুদ মূলত ব্যবহার হয়। তবে এর স্বাস্থ্যগত উপকারীতাও অনেক।
হলুদ পরিমিত মাত্রায় ব্যবহার করলে শিশুরা চর্মরোগে আক্রান্ত হয় না। এ কারণে গ্রামাঞ্চলের মায়েরা মাঝে মধ্যেই শিশুদের তেল-হলুদ মাখিয়ে গোসল করিয়ে থাকেন। শিশুদের কৃমি বিনাসের জন্য হলুদের ওষুধ দিয়ে থাকেন ভেশজবীদরা।
# কাঁচা হলুদের রস বয়স অনুপাতে প্রযোজ্য পরিমাণে (সর্বোচ্চ ২০ ফোটা) লবণ মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে কৃমি বিনষ্ট হয়।
# শিশুদের তোতলামি কাটিয়ে ওঠার জন্য হলুদ খাওয়ানো হয়। কথা বলতে গিয়ে আটকে গেলে কিন্বা তোতলামো থাকলে হলুদের গুড়া গাওয়া ঘি-এ ভেজে চেটে চেটে খেতে হয়। তবে বেশি পরিমাণ খাওয়া যাবে না। ২/৩ গ্রাম হলুদ এক চা চামচ আন্দাজ ঘি-এর সঙ্গে ভাজতে হবে।
# হামজ্বর হলে কাঁচা হলুদ শুকিয়ে গুড়ো করে উস্তা পাতার রস ও অল্প মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হয়। এতে হামজ্বর দ্রুত সেরে যায়।
# চিংড়ি মাছ, গরুর মাংস কিন্বা হাসের ডিম খেলে অনেকের শরীরে এলার্জি দেখা দেয়। শরীরের একাধিক অংশ চাকা হয়ে ফুটে ওঠে। এক্ষেত্রে নিম পাতার গুড়ার সঙ্গে দ্বিগুণ পরিমাণে কাঁচা হলুদের গুড়া এবং তিন গুণ পরিমাণ আমলকির গুড়া একসঙ্গে মিশিয়ে চা চামচ পরিমাণ প্রতিদিন খেতে হয়। তবে প্রায় ১৫ দিন খালি পেটে খেতে হবে। এতে এলার্জি কমে যাবে ৯০ ভাগ। তবে এলার্জি যদি না কমে তাতে শরীরের কোন ক্ষতি হবে না।
# একটি পরিবারে চোখ ওঠা শুরু হলে পর্যায়ক্রমে সকলেরই চোখ ওঠে। এতে হলুদ দিয়ে খুব সহজেই এই রোগের চিকিৎসা করা যায়। হলুদ থেতলে সেই রস নিয়ে পানিতে মেশাতে হয়। তারপর সেই পানি পরিষ্কার রুমাল ভিজিয়ে নিয়ে চোখ মুছতে হয়। তাতে দ্রুত চোখ ওঠা সেরে যায় এবং চোখের লাল ভাবও কেটে যায়।
# জোঁক ধরলে বা শরীরের কোন স্থানে হাড় মচকে গেলে হলুদ বাটা কিন্বা হলুদ গুড়া দিতে হয়। মচকানো স্থানে হলুদ এবং লবণ মিশিয়ে দিলে মচকানো ব্যথা দ্রুত কেটে যায়।
# রূপচর্চায় হলুদের ব্যবহার রয়েছে। কাঁচা হলুদের রস খেলে ত্বক সুন্দর থাকে। কাঁচা হলুদ ও নিমপাতা বেটে মুখে লাগালে ব্রণ সারে এবং মুখের স্ক্রীণ ভালো থাকে।
চোখ, চুল ও মুখের রোগসহ নানা উপকার করে লবণ
চোখ, চুল ও মুখের রোগসহ নানা ধরনের রোগে উপকার পাওয়া যায় লবণ। তবে অবশ্যই লবণ ব্যবহার করতে হবে পরিমিতভাবে। আসুন কিভাবে এই লবণ থেকে উপকার পাওয়া যাবে সে বিষয়ে যেনে নিই।
লবণ রক্তে ও শরীরের তরল রসের ঘন হয়ে যাওয়া বা দানা বাধা রোধ করে। সেগুলোকে তরল বা দ্রবণীয় অবস্থায় রাখে। ব্রেণে ও স্নায়ুতে বেশি জলীয় বা তরল পদার্থ জমা হতে দেয় না। শরীরের যেসব পদার্থের উপর জীবনি শক্তি নির্ভর করে সেই সব নানা রকমের রস নি:স্মরণ করে।
প্রয়োজনের বেশি লবণ খাওয়া উচিত নয়। অনেক দিন ধরে বেশি লবণ দেওয়া খাবার খেয়ে থাকলে মাঝে মাঝে খাদ্যদ্রব্য একেবারে লবণ বাদ দিলে ভালো হয়। এভাবে মাঝে মাঝে লবণ উপবাস করলে শরীরে অনেক উপকার হয়। শরীর ফুলে ওঠা বেরি বেরি, অর্শ্ব, হাঁপানি, রক্তের চাপ প্রভৃতি অসুখে লবণ খাওয়া বারণ বা খুবই অল্প পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে। তরকারি, ডাল ইত্যাদি কম লবণ দিয়ে রান্না করতে হয়। পাতে আলাদা করে লবণ খাওয়া একেবারেই অনুচিত।
প্রয়োজনের বেশি লবণ খাওয়া উচিত নয়। অনেক দিন ধরে বেশি লবণ দেওয়া খাবার খেয়ে থাকলে মাঝে মাঝে খাদ্যদ্রব্য একেবারে লবণ বাদ দিলে ভালো হয়। এভাবে মাঝে মাঝে লবণ উপবাস করলে শরীরে অনেক উপকার হয়। শরীর ফুলে ওঠা বেরি বেরি, অর্শ্ব, হাঁপানি, রক্তের চাপ প্রভৃতি অসুখে লবণ খাওয়া বারণ বা খুবই অল্প পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে। তরকারি, ডাল ইত্যাদি কম লবণ দিয়ে রান্না করতে হয়। পাতে আলাদা করে লবণ খাওয়া একেবারেই অনুচিত।
খাওয়া দাওয়ায় লবণের গুণ ও প্রয়োগ:
# বিষাক্ত পোকা-মাকড়ে, হাত পুড়ে যাওয়া, ক্ষতে ও রক্তপাতে লবণ লাগালে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।
# চোখ, চুল ও মুখের রোগে এবং হাত-পা ফাটলে লবণ পানিতে প্রলেপ লাগালে উপকার পাওয়া যায়।
# শরীরে লবণের অভাব হলে নানা অসুখ এমনকি কৃমি পর্যন্ত হতে পারে।
# কোন কারণে পেটে বিষ চলে গেলে শরীরের প্রকৃতি অনুসারে এক চা চামচ, চার ভাগের এক ভাগ অথবা আধা চা চামচ লবণ মিশিয়ে পানি খাওয়ায়ে বমি করালে বিষ বেরিয়ে যায়। কিন্বা ১৫/২০ মিনিট পর মলাবেগ আসে এবং মলের সঙ্গে বিশ বেরিয়ে যায়।
# পানিতে লবণ মিশিয়ে ফুটিয়ে খেলে বমি বন্ধ হয়।
# লবণ শুকনা তাওয়ায় লাল হওয়া পর্যন্ত সেকে নিয়ে হালকা গরম পানি মিশিয়ে খেলে (অল্প পরিমাণ) বদ হজম, উদরাবাত, আমজ্বর, কফজ্বর আর বিষ্মজ্বর ও ঠাণ্ডা লেগে যে জ্বর হয় সে জ্বরে উপকার হয়।
# সবার আগে হালকা গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে খেলে অন্ত্র পরিষ্কার হয়, কোষ্ঠকাঠিণ্য দূর হয় এবং শৌচশুদ্ধি হয়। পুরনো কৌষ্ঠকাঠিণ্যও সেরে যায়।
# সকালে ঘুম থেকে উঠে কিছুদিন ধরে লবণ মেশানো পানি খেলে পেটের ভেতরের ছোট ছোট কৃমি বেরিয়ে যায়, নতুন কৃমি জন্মায় না। পাঁচন ক্রিয়া (হজম) ভালো হয়।
# বিষাক্ত পোকা-মাকড়ে, হাত পুড়ে যাওয়া, ক্ষতে ও রক্তপাতে লবণ লাগালে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।
# চোখ, চুল ও মুখের রোগে এবং হাত-পা ফাটলে লবণ পানিতে প্রলেপ লাগালে উপকার পাওয়া যায়।
# শরীরে লবণের অভাব হলে নানা অসুখ এমনকি কৃমি পর্যন্ত হতে পারে।
# কোন কারণে পেটে বিষ চলে গেলে শরীরের প্রকৃতি অনুসারে এক চা চামচ, চার ভাগের এক ভাগ অথবা আধা চা চামচ লবণ মিশিয়ে পানি খাওয়ায়ে বমি করালে বিষ বেরিয়ে যায়। কিন্বা ১৫/২০ মিনিট পর মলাবেগ আসে এবং মলের সঙ্গে বিশ বেরিয়ে যায়।
# পানিতে লবণ মিশিয়ে ফুটিয়ে খেলে বমি বন্ধ হয়।
# লবণ শুকনা তাওয়ায় লাল হওয়া পর্যন্ত সেকে নিয়ে হালকা গরম পানি মিশিয়ে খেলে (অল্প পরিমাণ) বদ হজম, উদরাবাত, আমজ্বর, কফজ্বর আর বিষ্মজ্বর ও ঠাণ্ডা লেগে যে জ্বর হয় সে জ্বরে উপকার হয়।
# সবার আগে হালকা গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে খেলে অন্ত্র পরিষ্কার হয়, কোষ্ঠকাঠিণ্য দূর হয় এবং শৌচশুদ্ধি হয়। পুরনো কৌষ্ঠকাঠিণ্যও সেরে যায়।
# সকালে ঘুম থেকে উঠে কিছুদিন ধরে লবণ মেশানো পানি খেলে পেটের ভেতরের ছোট ছোট কৃমি বেরিয়ে যায়, নতুন কৃমি জন্মায় না। পাঁচন ক্রিয়া (হজম) ভালো হয়।
চলুন জানি বাসর রাতে বিড়াল মারার কুসংস্কার এলো কিভাবে। সবার জানা উচিৎ
চলুন, আগে বিড়াল মারার কাহিনীটা শুনা যাক। একদা বাগদাদের বাদশাহ এর ছিল দুইজন কন্যা। এই দুই রাজকন্যা ছাড়া তার ছিলনা কোন রাজপুত্র। রাজকন্যা দুজন ছিল বাদশা এর অনেক অনেক আদরের। সবসময় দুই রাজ কন্যার জন্যে দশ পনেরো জন দাসী প্রস্তুত থাকতো। কখন কোনো রাজকন্যার কি দরকার হবে আর তারা হুকুম পালন করবে। দুই রাজকন্যারই একটা করে বিড়াল ছিলো। বিড়াল দুটো ছিলো তাদের সবসময় এর সাথী। তারা খেতে বসলে এমনকি ঘুমাতে গেলেও ঐ বিড়াল দুটো সাথে সাথে থাকত। তো দেখতে দেখতে দুই রাজকন্যাই একসময় বড় হয়ে গেলো। তারা বিবাহ উপযুগি হয়ে গেলো। তারপর বাদশাহ এর চিন্তা বাড়তে লাগল, কারন এই দুই রাজকন্যার জামাইদের উপরেই তার এই বিশাল রাজ্যের দায়িত্ত দিয়ে যেতে হবে। সুতারাং এমন যোগ্য দুজন ছেলে খুজে বের করতে হবে। যারা এই গুরু দায়িত্ব ভালো ভাবে পালন করতে পারবে।
সারা রাজ্যে অনেক খোজাখুজি করে এমন দুইভাই পাওয়া গেলো যাদের কাছে রাজকন্যাদের বিয়ে দেয়া যায় বলে বাদশাহ এর মনে হল। তারপর অনেক ধুমধাম করে বিয়ে হল দুই রাজকন্যার একসাথে।অতঃপর বাদশাহ দুই মেয়ে জামাইকে সমান ভাবে রাজ্যের দায়িত্য ভাগ করে দিলেন। এরপর দুই ভাই রাজ্য চালনা নিয়ে অনেক ব্যাস্ত হয়ে পরলো। দুইজনের অনেক দিন দেখা সাক্ষাত নেই। হঠাত করেই রাজ্যের একটা বড় অনুষ্ঠানে দুই ভাই এর দেখা হয়ে গেলো। তারপর দুইজনই আবেগে আপ্লুত হয়ে পরলো এতদিন পরে ভাইএর সাথে দেখা এই জন্যে। তারপর অনেক কথায় কথায় ছোট ভাই জিজ্ঞাসা করলো তাদের বৌ মানে রাজকন্যাদের কথা। তখন বড় ভাই বলল হুম, বড় রাজকন্যা তাকে অনেক সমীহ করে চলে। তার কোন কাজই করা লাগে না। ইত্যাদি ইত্যাদি। এইসব শুনে ছোটভাই বলল ছোট রাজকন্যা তার কোন যত্নই করে না। সবসময় রাগা রাগি করে এমনকি মাঝে মাঝে গায়েও হাত তুলে। তখন বড় ভাইকে জিজ্ঞাসা করল কিভাবে রাজকন্যাকে বশ করল? তখন বড় ভাই বলল, রাজকন্যার বিড়ালের কথা।ছোট ভাই বলল হ্যাঁ ওই বিড়ালকে তো আমার চাইতেও বেশি যত্নে রাখে। বড়ভাই বলল, হ্যাঁ, প্রথম দিন বাসর রাতে ঘরে ঢুকেই আমি একটা তরবারি দিয়ে ওই বিড়ালের ওপরে দিলাম এক কোপ। ব্যাস একবারে দুইভাগ।
এই ঘটনায় বড় ভাই ভাবলো আমি মনে হয় অনেক বড় কোন বীর, এরপর থেকেই সে আমাকে অনেক সমীহ করে চলে। তো এই কথা শুনে ছোটভাই মনে মনে ভাবলো ঠিক আছে আজকে বাড়ী ফিরেই বিড়ালের জীবন নাশ করা লাগবে। তারপরে আবার অনেকদিন পরে দুই ভাই এর দেখা। এবার ছোট ভাইএর শরীরে অনেক কাটা দাগ। বড়ভাই জিজ্ঞাসা করলো কি খবর কোন যুদ্ধে আহত হয়েছিলে নাকি? ছোটভাই বলল, না ভাই তোমার ঘটনা শুনে আমি ওইদিন বাসায় গিয়ে তরবারি নিয়ে এক কোপে বিড়ালটাকে দুইভাগ করে দিলাম। কিন্তু আমার বেলায় ঘটনা উলটো হল।আমাকে এর শাস্তি সরূপ একমাস কারাবন্দি আর অত্যাচার ভোগ করা লাগলো। তখন বড়ভাই বলল, বিড়াল বাসর রাতেই মারতে হয়, পরে মারলে কোন লাভ নাই। প্রকৃতপক্ষে বাসর রাতে বিড়াল মেরে কিছু হয়না। এগুলো শুধুই গল্প কথা…. এর সাথে ইসলামের দূরতমও কোন সম্পর্ক নেই। এ ধরনের অহেতুক কুসংস্কার থেকে আমাদের বেঁচে থাকা উচিৎ। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দিন। আমীন!
সারা রাজ্যে অনেক খোজাখুজি করে এমন দুইভাই পাওয়া গেলো যাদের কাছে রাজকন্যাদের বিয়ে দেয়া যায় বলে বাদশাহ এর মনে হল। তারপর অনেক ধুমধাম করে বিয়ে হল দুই রাজকন্যার একসাথে।অতঃপর বাদশাহ দুই মেয়ে জামাইকে সমান ভাবে রাজ্যের দায়িত্য ভাগ করে দিলেন। এরপর দুই ভাই রাজ্য চালনা নিয়ে অনেক ব্যাস্ত হয়ে পরলো। দুইজনের অনেক দিন দেখা সাক্ষাত নেই। হঠাত করেই রাজ্যের একটা বড় অনুষ্ঠানে দুই ভাই এর দেখা হয়ে গেলো। তারপর দুইজনই আবেগে আপ্লুত হয়ে পরলো এতদিন পরে ভাইএর সাথে দেখা এই জন্যে। তারপর অনেক কথায় কথায় ছোট ভাই জিজ্ঞাসা করলো তাদের বৌ মানে রাজকন্যাদের কথা। তখন বড় ভাই বলল হুম, বড় রাজকন্যা তাকে অনেক সমীহ করে চলে। তার কোন কাজই করা লাগে না। ইত্যাদি ইত্যাদি। এইসব শুনে ছোটভাই বলল ছোট রাজকন্যা তার কোন যত্নই করে না। সবসময় রাগা রাগি করে এমনকি মাঝে মাঝে গায়েও হাত তুলে। তখন বড় ভাইকে জিজ্ঞাসা করল কিভাবে রাজকন্যাকে বশ করল? তখন বড় ভাই বলল, রাজকন্যার বিড়ালের কথা।ছোট ভাই বলল হ্যাঁ ওই বিড়ালকে তো আমার চাইতেও বেশি যত্নে রাখে। বড়ভাই বলল, হ্যাঁ, প্রথম দিন বাসর রাতে ঘরে ঢুকেই আমি একটা তরবারি দিয়ে ওই বিড়ালের ওপরে দিলাম এক কোপ। ব্যাস একবারে দুইভাগ।
এই ঘটনায় বড় ভাই ভাবলো আমি মনে হয় অনেক বড় কোন বীর, এরপর থেকেই সে আমাকে অনেক সমীহ করে চলে। তো এই কথা শুনে ছোটভাই মনে মনে ভাবলো ঠিক আছে আজকে বাড়ী ফিরেই বিড়ালের জীবন নাশ করা লাগবে। তারপরে আবার অনেকদিন পরে দুই ভাই এর দেখা। এবার ছোট ভাইএর শরীরে অনেক কাটা দাগ। বড়ভাই জিজ্ঞাসা করলো কি খবর কোন যুদ্ধে আহত হয়েছিলে নাকি? ছোটভাই বলল, না ভাই তোমার ঘটনা শুনে আমি ওইদিন বাসায় গিয়ে তরবারি নিয়ে এক কোপে বিড়ালটাকে দুইভাগ করে দিলাম। কিন্তু আমার বেলায় ঘটনা উলটো হল।আমাকে এর শাস্তি সরূপ একমাস কারাবন্দি আর অত্যাচার ভোগ করা লাগলো। তখন বড়ভাই বলল, বিড়াল বাসর রাতেই মারতে হয়, পরে মারলে কোন লাভ নাই। প্রকৃতপক্ষে বাসর রাতে বিড়াল মেরে কিছু হয়না। এগুলো শুধুই গল্প কথা…. এর সাথে ইসলামের দূরতমও কোন সম্পর্ক নেই। এ ধরনের অহেতুক কুসংস্কার থেকে আমাদের বেঁচে থাকা উচিৎ। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দিন। আমীন!
সপ্তাহে ১ বার ব্যবহার করুন এই ফেসপ্যাকটি, যৌবন ধরে রাখুন আজীবন!
সৌন্দর্যের দিক থেকে জাপানিজ নারীরা সবসময়েই অনবদ্য। বিশেষ করে তাঁদের ঝলমলে চুল এবং নিখুঁত ত্বকের কারণে। এমন অনেক জাপানিজ চিত্রনায়িকা ও মডেলরা আছেন যাঁদের সত্যিকারের বয়স অনেক বেশি, কিন্তু দেখলে মনে হয় এখনও তরুণী! বিশ্বজুড়েই জাপানিজ নারীদের এই চিরতারুণ্য একটা রহস্যের বিষয় বৈকি। মজার ব্যাপার হচ্ছে, তাঁদের এই তারুণ্যের পেছনে যে উপাদানটি সবচেয়ে বেশি কাজ করে তা হল ‘ভাত’। কি, অবাক হচ্ছেন? হ্যাঁ, জাপানিজদের বয়স ধরে রাখে ভাতের তৈরি একটি ফেস প্যাক। আসুন তাহলে জেনে নিই সেই জাদুকরী ফেসপ্যাকটির কথা।
উপকরণ:
৩ টেবিল চামচ ভাত
১ টেবিল চামচ মধু
১ টেবিল চামচ গরম দুধ
যেভাবে তৈরি করবেন:
-চাল সিদ্ধ করুন। অর্থাৎ ভাত রান্না করুন। এবার চাল থেকে পানি আলাদা করে ফেলুন বা মাড় ফেলে দিন।
-গরম ভাত চটকে নিন, নাহলে পরে শক্ত হয়ে যাবে। এর সাথে হালকা গরম বা উষ্ণ দুধ এবং মধু দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন।
যেভাবে ব্যবহার করবেন :
-প্রথমে মুখ ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। সম্ভব হলে কোন হালকা ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
-মুখ শুকিয়ে গেলে ভাতের প্যাকটি মুখ ও ঘাড়ে ভাল করে লাগান।
-প্যাকটি শুকিয়ে গেলে ভাত সিদ্ধ পানি বা মাড় দিয়ে মুখ ও ঘাড় ধুয়ে ফেলুন।
-সপ্তাহে একবার ব্যবহার করুন।
যেভাবে কাজ করে:
ভাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই যা ত্বককে ক্ষতিকর উপাদান থেকে রক্ষা করে থাকে ও তারুণ্য ধরে রাখে। তার সাথে সাথে সানবার্নও প্রতিরোধ করে। এছাড়া এতে লিনোলিক এসিড যা ত্বকের বলিরেখা দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। ভাতের মাড়ে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান আছে যা ত্বকের পানির পরিমাণ বজায় রাখার পাশপাশি রক্ত চলাচল ঠিক রাখে।
মাত্র দুই সপ্তাহে ত্বকের রঙ ফর্সা করবে ঘরে তৈরি এই ক্রিমটি!
ত্বকের রং উজ্জ্বল করার জন্য আমাদের কত শত চেষ্টা। এর জন্য কত দামী দামী রং ফর্সাকারী ক্রিম, লোশন ব্যবহার করে থাকি আমরা অনেকেই। আবার অনেকে স্কিন ট্রিটমেন্টও করিয়ে থাকি। ব্লিচিং, হোয়াটিং ট্রিটমেন্ট সাময়িকভাবে আপনার ত্বক উজ্জ্বল করলেও, স্থায়ীভাবে এটি আপনার ত্বকের ক্ষতি করে থাকে। তাই রাসায়নিক পণ্য ব্যবহার করার চেয়ে ঘরে তৈরি করা ক্রিম ব্যবহার করা অনেক বেশি নিরাপদ। ত্বকের রঙ যদি ফর্সা করতেই চান, তাহলে ঘরেি তৈরি করে ফেলতে পারেন রং ফর্সাকরী নাইট ক্রিম খুব সহজে। আসুন, আজ জেনে নিই বাজারের মত স্কিন হোয়াটিং নাইট ক্রিম তৈরি করার পদ্ধতি।
যা যা লাগবে
১/৪ কাপ কাঠ বাদাম
১/৪ কাপ টক দই ( ক্রিমী)
২ টেবিল চামচ কাঁচা লেবুর রস
এক চিমটি হলুদের গুঁড়া
১/২ চা চামচ চন্দনের গুঁড়া
১ চিমটি জাফরন
যেভাবে তৈরি করবেন
-বাদাম সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে বাদামের খোসা ছাড়িয়ে পিষে পেষ্ট করে নিন।
-এখন বাদামের পেষ্ট, টক দই, লেবুর রস, হলুদের গুঁড়া, চন্দনের গুঁড়া, জাফরান মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। খুব ভাল করে উপাদানগুলো মেশান যেন দানা দানা না থাকে।
-কাঁচা লেবুর রসের পরিবর্তে আপনি পাকা লেবুর রসও ব্যবহার করতে পারেন।
-হলুদের গুঁড়া ব্যবহারে আপনার যদি অ্যালার্জি থাকে তবে আপনি হলুদ বাদ দিতে পারেন।
-ক্রিমটি তৈরি করার পর ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করুন। সাথে সাথে ব্যবহার করতে চাইলে ব্যবহারের আগে কমপক্ষে এক ঘন্টা ফ্রিজে রেখে দিন।
-এক সপ্তাহের বেশি এটি সংরক্ষণ করবেন না।
যেভাবে ব্যবহার করবেন
-ঘুমাতে যাবার আগে এই ক্রিমটি ব্যবহার করতে হবে।
-প্রথমে হালকা কোন ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। আপনি চাইলে দুধ দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে পারেন।
-মুখ ধোয়ার পর ক্রিমটি হাতে নিয়ে আঙুলের সাহায্যে ম্যাসাজ করে মুখে লাগান। ক্রিমটি যেন ভাল করে মুখের সাথে মিশে যায়, সে দিকে লক্ষ্য রাখবেন। ক্রিমটি মুখে লাগিয়ে ঘুমিয়ে পরুন।
-সকালে ঘুম থেকে উঠে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি আপনার ত্বকের কালো দাগ, ব্রণের দাগ , ব্ল্যাক হেডেস দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে।
-প্রতিদিন এটি ব্যবহার করুন। দুই সপ্তাহের মধ্যে আপনি আপনার ত্বকের পরিবর্তন দেখতে পারবেন।
সপ্তাহে মাত্র ১ বার করুন এই কাজটি আর চির বিদায় বলুন ব্ল্যাকহেডসকে
ব্ল্যাকহেডস কখনোই হয়নি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। মূলত ব্ল্যাকহেডস লোমকূপের নিচে থাকে। পরে এটি ব্রণ আকারে আত্নপ্রকাশ করে। শুরুতে ব্ল্যাকহেডসের প্রতিকার করা না হলে আপনার ত্বকে ব্রণ দিয়ে ভরে যেতে পারে। ত্বক ঠিকমত পরিষ্কার করা না হলে ত্বকের লোমকুপের গোঁড়ায় ময়লা জমে যায়, আর যার থেকেই সৃষ্টি হয় ব্ল্যাকহেডসের। এই ব্ল্যাকহেডসকে বিদায় বলুন সহজ একটি উপায়ে।
যা যা লাগবে-
মিন্ট টুথপেষ্ট
লবণ বা বেকিং সোডা
বরফের টুকরো
যা করবেন-
-প্রথমে একটি পাত্রে মিন্ট টুথপেষ্ট নিন।
-এবার তার সাথে লবণ মেশান।
-টুথপেষ্ট এবং লবণ সামান্য পানি দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন।
-মুখটা ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। এবার ভেজা মুখে প্যাকটি লাগান, বিশেষ করে নাক, চিবুক যে স্থানগুলোতে ব্ল্যাকহেডস বেশি হয়ে থাকে। এবার ৫-১০ মিনিট অপেক্ষা করুন।
-হয়তো এটি কিছুক্ষণের জন্য জ্বালা পোড়া করতে পারে, তবে তা সাময়িক সময়ের জন্য। অল্প কিছুক্ষণ পর এটি চলে যাবে। (খুব বেশী জ্বালা পোড়া করলে ব্যবহার করবেন না)
-৫ মিনিট পর প্যাক মুখে বসে গেলে ভেজা আঙুল দিয়ে ত্বক ম্যাসাজ করুন। ত্বকে ম্যাসাজ করার জন্য দুই আঙুল ব্যবহার করুন। হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন। খুব জোড়ে ম্যাসাজ করবেন না যেন ত্বকের ক্ষতি না হয়।
– তারপর কসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। সব শেষে বরফের টুকরা দিয়ে মুখ ম্যাসাজ করে ফেলুন। এটি ত্বকের খোলা লোমকূপগুলো বন্ধ করে দেওয়ার সাথে সাথে ত্বকের ময়লাও দূর করে থাকবে।
টিপস:
-এই প্যাকটি চোখের কাছাকাছি জায়গাগুলোতে লাগাবেন না।
-অনেকের নাক বা চিবুকের ত্বক লাল হয়ে যেতে পারে, এতে ভয় পাবেন না। এটি সাময়িক।
-অবশ্যই এটি ব্যবহার করার পর বরফ দিয়ে ত্বকের লোমকূপ বন্ধ করে দিবেন।
-সপ্তাহে একবার করুন। নিয়মিত ব্যবহারে এটি ব্ল্যাকহেডস দূর করে দিবে।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট
ডেন্টিস্ট ছাড়াই দূর করুন দাঁতের টার্টার
পিরিওডোনটাইটিস কী
পিরিওডোনটাইটিস হলে দাঁতের মাড়ির টিস্যুতে প্রদাহ হয়। ফলে মাড়ি সংকোচিত হয়ে অকালে দাঁত পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এ সমস্যা এড়াতে প্রয়োজন নিয়মিত দাঁতে জমা টার্টার পরিষ্কার করা। টার্টার দূর করার প্রথম সমাধান হলো ডেন্টিস্ট। তবে আপনি চাইলে বাড়িতে বসেও এ সমস্যার সমাধান করতে পারেন।
টার্টার পরিষ্কার করতে যা লাগবে
• বেকিং সোডা
• ডেন্টাল পিক
• লবণ
• হাইড্রোজেন পেরোক্সাইড
• পানি
• টুথব্রাশ
• কাপ
• অ্যান্টিসেপটিক মাউথ ওয়াশ
টার্টার দূর করতে সবচেয়ে সহজলভ্য ও কার্যকরী উপাদান হচ্ছে বেকিং সোডা। আসুন এবার জেনে নিই টার্টার দূর করার পদ্ধতি।
প্রথম ধাপ
কাপে এক টেবিল চামচ বেকিং সোডার সঙ্গে ১/২ চা চামচ লবণ মেশান। এবার গরম পানিতে টুথব্রাশ ভিজিয়ে বেকিং সোডা ও লবণের মিশ্রণ দিয়ে পাঁচ মিনিট ধরে দাঁত ব্রাশ করুন। সবশেষে কুলকুচি করে নিন।
দ্বিতীয় ধাপ
এক কাপ হাইড্রোজেন পেরোক্সাইডের সঙ্গে ১/২ কাপ হালকা গরম পানি মেশান। এই পানি মুখে নিয়ে এক মিনিট রাখুন। এরপর ১/২ কাপ পানি দিয়ে কুলকুচি করে ফেলুন।
তৃতীয় ধাপ
ডেন্টাল পিক দিয়ে দাঁতের হলুদ টার্টার ধীরে ধীরে ঘষে তুলুন। মাড়ির ক্ষতি এড়াতে ডেন্টাল পিক ব্যবহারের সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন।
চতুর্থ ধাপ
অ্যান্টিসেপটিক মাউথ ওয়াশ দিয়ে কুলকুচি করুন।
ঝকঝকে সাদা হাসির জন্য আরও কয়েকটি টিপস-
স্ট্রবেরি ও টমেটো
ভিটামিন সি-তে পরিপূর্ণ বলে স্ট্রবেরি ও টমেটো দাঁতের জন্য ভালো। টার্টার পরিষ্কার করতে স্ট্রবেরি বা টমেটো দাঁতে ঘষে পাঁচ মিনিট রাখুন। এতে টার্টার নরম হবে। এবার বেকিং সোডা মেশানো হালকা গরম পানি দিয়ে কুলি করে ফেলুন। স্ট্রবেরি বা টমেটো ছাড়াও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ক্যাপসিকাম, লেবু, পেঁপে ও কমলালেবু ব্যবহার করা যাবে।
পনির
খাওয়ার আগে পনির খেয়ে নিতে পারেন। পনির খাবারের এসিডকে নিষ্ক্রিয় করে দেয় যা টার্টার তৈরির মূল উপাদান।
জেনে রাখা ভালো
• দাঁত পরিষ্কারের জন্য নরম ব্রাশ ব্যবহার করুন। দাঁত ব্রাশের সময় ওপর-নিচ ব্রাশ করুন। খেয়াল রাখুন মাড়ি ও দাঁতের মধ্যবর্তী অংশ যেন পরিষ্কার হয়।
• ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করুন।
• মরিচ জাতীয় খাবার লালা নিঃসরণে সাহায্য করে। যা প্রাকৃতিকভাবে মুখ পরিষ্কার করে।
• ব্যাকটেরিয়া দূর করতে রাতে শোয়ার আগে কমলার খোসা দাঁতে ঘষে নিন। সকালবেলা ব্রাশ করে ফেলুন।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট
বিছানাই ঘুম থেকে তুলে দেবে আপনাকে ! (ভিডিও)
সকালে ঘুম থেকে ওঠা প্রায় অসম্ভব কাজের একটি। অলস মানুষের কাছে এমনটাই মনে হয়। আবার অনেক পরিশ্রমী মানুষও সকালে সহজে ঘুম থেক উঠতে পারেন না। এদের জন্যে ঘড়ির শক্তিশালী অ্যালার্মও কোনো কাজ দেয় না। তাহলে সমাধান? একেবারে অব্যর্থ সমাধান দিয়েছে কলিন ফার্জ।
কলিনের নিজেরও একই সমস্যা। তিনি ঘুম থেকে উঠতে পারেন না। এ জন্যে জীবনে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। কিন্তু আর না। বিছানা ছেড়ে উঠতে না চাইলেও বিছানা আপনাকে ঠিকই ছুঁড়ে ফেলে দেবে। কারণ তিনি বানিয়েছেন ‘হাই ভোল্টেজ ইজেকটর বেড’। এটি বেল, ট্রাম্পেট এবং গাড়ির হর্নের আওয়াজ তো বাজাবেই, সেই সঙ্গে আপনাকে সরাসরি বিছানা থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেবে।
এটি বানাতে ফার্জ বিছানার ফ্রেমের সঙ্গে হিঞ্জ বসিয়েছেন। এর মাধ্যমে বিছানার ফ্রেম ও ম্যাট্রেস এক লাফে ওপরের দিকে উঠে যাবে। এ কাজে শক্তি জোগাতে পিস্টন বসিয়েছেন তিনি। গোটা বিষয়ের শক্তি জোগাতে শক্তিশালী এয়ার কম্প্রেসার ব্যবহার করা হয়েছে। এই শক্তির মাত্রা কম-বেশি করার ব্যবস্থা রয়েছে। বিছানাটি কত জোরে আপনাকে ছুড়ে দেবে এবং আপনি কত দূরে পড়তে চান তার ওপর নির্ভর করে কম্প্রেসারের শক্তি নির্ধারণ করবেন।
মূলত কফি কম্পানি টেইলর অব হ্যারোগেট-এর একটি ক্যাম্পেইনে মজার অংশ হিসেবে এই বিছানাটি বানিয়েছেন তিনি। কফিল ব্লেন্ড ‘হাই ভোল্টেজ’-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিছানাটি বানানো হয়েছে।
কলিনের নিজেরও একই সমস্যা। তিনি ঘুম থেকে উঠতে পারেন না। এ জন্যে জীবনে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। কিন্তু আর না। বিছানা ছেড়ে উঠতে না চাইলেও বিছানা আপনাকে ঠিকই ছুঁড়ে ফেলে দেবে। কারণ তিনি বানিয়েছেন ‘হাই ভোল্টেজ ইজেকটর বেড’। এটি বেল, ট্রাম্পেট এবং গাড়ির হর্নের আওয়াজ তো বাজাবেই, সেই সঙ্গে আপনাকে সরাসরি বিছানা থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেবে।
এটি বানাতে ফার্জ বিছানার ফ্রেমের সঙ্গে হিঞ্জ বসিয়েছেন। এর মাধ্যমে বিছানার ফ্রেম ও ম্যাট্রেস এক লাফে ওপরের দিকে উঠে যাবে। এ কাজে শক্তি জোগাতে পিস্টন বসিয়েছেন তিনি। গোটা বিষয়ের শক্তি জোগাতে শক্তিশালী এয়ার কম্প্রেসার ব্যবহার করা হয়েছে। এই শক্তির মাত্রা কম-বেশি করার ব্যবস্থা রয়েছে। বিছানাটি কত জোরে আপনাকে ছুড়ে দেবে এবং আপনি কত দূরে পড়তে চান তার ওপর নির্ভর করে কম্প্রেসারের শক্তি নির্ধারণ করবেন।
মূলত কফি কম্পানি টেইলর অব হ্যারোগেট-এর একটি ক্যাম্পেইনে মজার অংশ হিসেবে এই বিছানাটি বানিয়েছেন তিনি। কফিল ব্লেন্ড ‘হাই ভোল্টেজ’-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিছানাটি বানানো হয়েছে।
বাংলাদেশের ৬৪ জেলার নামকরণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
বাংলাদেশের নাগরিক হয়েও অনেকেই দেশের ৬৪টি জেলার নামকরণের সঠিক ইতিহাস জানেন না। এমটি নিউজের পাঠকদের জন্য তাই দেশের ৬৪ জেলার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরা হলো-
ইতিহাস ও সাহিত্য
বাংলাদেশের ৭ টি বিভাগের ৬৪ টি জেলার নামকরণের ইতিহাস সংক্ষেপে ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হল।
১. বরিশাল বিভাগ ২. চট্টগ্রাম ৩. ঢাকা ৪. খূলনা বিভাগ ৫. রাজশাহী বিভাগ ৬. রংপুর ভিভাগ ও ৭. সিলেট বিভাগ।
বরিশাল বিভাগঃ-
বরিশাল বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৩ সালে। বরিশাল, বরগুনা, ঝালকাঠী, পটুয়াখালি, পিরোজপুর ও ভোলা এই ৬ জেলা নিয়ে বরিশাল বিভাগ গঠিত হয়। অবশেষে ২০০০ সালে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠিত হয়।
১. বরগুনা জেলাঃ-
বরগুনা নামের সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য পাওয়া না গেলেও জানা যায় যে, উত্তরাঞ্চলের কাঠ ব্যবসায়ীরা এ অঞ্চলে কাঠ নিতে এস খরস্রোতা
খাকদোন নদী অতিক্রম করতে গিয়ে অনুকুল প্রবাহ বা বড় গোনের জন্য এখানে অপেক্ষা করত বলে এ স্থানের নাম হয় বড় গোনা।কারো মতে আবার স্রোতের বিপরীতে গুন (দড়ি) টেনে নৌকা অতিক্রম করতে হতো বলে এ স্থানের নাম বরগুনা। কেউ কেউ বলেন, বরগুনা নামক কোন প্রভাবশালী রাখাইন অধিবাসীর নামানুসারে বরগুনা। আবার কারো মতে বরগুনা নামক কোন এক বাওয়ালীর নামানুসারে এ স্থানের নাম করণ করা হয় বরগুনা।
২. বরিশাল জেলাঃ-
বরিশাল নামকরণ সম্পর্কে বিভিন্ন মতভেদ রয়েছে। এক কিংবদন্তি থেকে জানা যায় যে, পূর্বে এখানে খুব বড় বড় শাল গাছ জন্মাতো, আর এই বড় শাল গাছের কারণে (বড়+শাল) বরিশাল নামের উৎপত্তি। কেউ কেউ দাবি করেন, পর্তুগীজ বেরি ও শেলির প্রেমকাহিনীর জন্য বরিশাল নামকরণ করা হয়েছে। অন্য এক কিংবদন্তি থেকে জানা যায় যে, গিরদে বন্দরে (গ্রেট বন্দর) ঢাকা নবাবদের বড় বড় লবণের গোলা ও চৌকি ছিল। ইংরেজ ও পর্তুগীজ বণিকরা বড় বড় লবণের চৌকিকে ‘বরিসল্ট’ বলতো। অথাৎ বরি (বড়)+ সল্ট(লবণ)= বরিসল্ট। আবার অনেকের ধারণা এখানকার লবণের দানাগুলো বড় বড় ছিল বলে ‘বরিসল্ট’ বলা হতো । পরবর্তিতে বরিসল্ট শব্দটি পরিবর্তিত হয়ে বরিশাল নামে পরিচিতি লাভ করে।
৩. ভোলা জেলাঃ-
ভোলা জেলার নামকরণের পিছনে স্থায়ীভাবে একটি লোককাহিনী প্রচলিত আছে যে, ভোলা শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া বেতুয়া নামক খালটি এখনকার মত অপ্রশস্ত ছিলনা। একসময় এটি পরিচিত ছিল বেতুয়া নদী নামে। খেয়া নৌকার সাহায্যে নদীতে পারাপার করা হত। বুড়ো এক মাঝি এখানে খেয়া নৌকার সাহায্যে লোকজন পারাপার করতো। তাঁর নাম ছিল ভোলা গাজী পাটনী। বর্তমানে যোগীরঘোলের কাছেই তাঁর আস্তানা ছিল। এই ভোলা গাজীর নামানুসারেই এক সময় স্থানটির নাম দেয়া হয় ভোলা। সেই থেকে আজ অব্দী ভোলা নামে পরিচিত।
৪. ঝালকাঠি জেলাঃ-
জেলার নামকরণের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এ জেলার জেলে সম্প্রদায়ের ইতিহাস। মধ্যযুগ-পরবর্তী সময়ে সন্ধ্যা, সুগন্ধা, ধানসিঁড়ি আর বিষখালী নদীর তীরবর্তী এলাকায় জেলেরা বসতি স্থাপন করে। এর প্রাচীন নাম ছিল ‘মহারাজগঞ্জ’। মহারাজগঞ্জের ভূ-স্বামী শ্রী কৈলাশ চন্দ্র জমিদারি বৈঠক সম্পাদন করতেন এবং পরবর্তীতে তিনি এ স্থানটিতে এক গঞ্জ বা বাজার নির্মাণ করেন। এ গঞ্জে জেলেরা জালের কাঠি বিক্রি করত। এ জালের কাঠি থেকে পর্যায়ক্রমে ঝালকাঠি নামকরণ করা হয় বলে ধারণা করা হয়। জানা যায়, বিভিন্ন স্থান থেকে জেলেরা এখানে মাছ শিকারের জন্য আসত এবং যাযাবরের মতো সুগন্ধা নদীর তীরে বাস করত। এ অঞ্চলের জেলেদের পেশাগত পরিচিতিকে বলা হতো ‘ঝালো’। এরপর জেলেরা বন-জঙ্গল পরিষ্কার করে এখানে স্থায়ীভাবে বসতি গড়ে তোলে। এভাবেই জেলে থেকে ঝালো এবং জঙ্গল কেটে বসতি গড়ে তোলার কারণে কাটি শব্দের প্রচলন হয়ে ঝালকাটি শব্দের উৎপত্তি হয়। পরবর্তীকালে ঝালকাটি রূপান্তরিত হয় ঝালকাঠিতে।১৯৮৪ সালের ১লা ফেব্রুয়ারী ঝালকাঠি পূর্ণাঙ্গ জেলার মর্যাদা লাভ করে।
৫. পটুয়াখালী জেলাঃ-
ঐতিহাসিক ঘটনাবলি থেকে জানা যায যে, পটুয়াখালী চন্দ্রদ্বীপ রাজ্যের অন্তর্ভক্ত ছিল। পটুয়াখালী নামকরণের পিছনে প্রায় সাড়ে তিনশত বছরের লুন।টন অত্যাচারের ইতিহাস জড়িত আছে বলে জানা যায়। পটুয়াখালী শহরের উত্তর দিক দিয়ে প্রবাহিত নদীটি পূর্বে ভরনী খাল নামে পরিচিত ছিল। ষোড়শ শতাব্দীর শুরু থেকে পর্তুগীজ জলদস্যুরা এই খালের পথ দিয়ে এস সন্নিহিত এলাকায় নির্বিচারে অত্যাচার হত্যা লুন্ঠন চালাত। স্থানীয় লোকেরা এই হানাদারদের ‘নটুয়া’ বলত এবং তখন থেকে খালটি নটুয়ার খাল নামে ডাকা হয়। কথিত আছে, এই “নটুয়ার খাল” খাল থেকে পরবর্তীতে এ এলাকার নামকরণ হয় পটুয়াখালী।
৬. পিরোজপুর জেলাঃ-
“ফিরোজ শাহের আমল থেকে ভাটির দেশের ফিরোজপুর,
বেনিয়া চক্রের ছোয়াচ লেগে পাল্টে হলো পিরোজপুর”
উপরোক্ত কথন থেকে পিরোজপুর নামকরণের একটা সূত্র পাওয়া যায়। নাজিরপুর উপজেলার শাখারী কাঠির জনৈক হেলাল উদ্দীন মোঘল নিজেকে মোঘল বংশের শেয় বংশধর হিসেবে দাবি করেছিলেন বলে জানা যায়। বাংলার সুবেদার শাহ।। সুজা আওরঙ্গজেবের সেনাপতি মীর জুমলার নিকট পরাজিত হয়ে বাংলার দক্ষিণ অঞ্চলে এসে আত্মগোপন করেন। এক পর্যায়ে নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা নদীর পাড়ে একটি কেল্লা তৈরি করে কিছুকাল অবস্থান করেন। মীর জুমলার বাহিনী এখানেও হানা দেয়, শাহ সুজা তাঁর দুই কন্যাসহ আরাকান রাজ্যে পালিয়ে যান। সেখানে তিনি অপর এক রাজার চক্রান্তে নিহত হন। পালিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর স্ত্রী ও এক শিশুপ্রত্র রেখে যান। পরবর্তীতে তারা অবস্থান পরিবর্তন করে ধীরে ধীরে পশ্চিমে চলে আসে এবং বর্তমান পিরোজপুরের পাশ্ববর্তী দামোদর নদীর মুখে আস্তানা তৈরি করেন। এ শিশুর নাম ছিল ফিরোজ এবং তাঁর নামানুসারে হয় ফিরোজপুর। কালের বিবর্তনে ফিরোজপুরের নাম হয় ‘পিরোজপুর’। পিরোজপুর ১৯৫৯ সালের ২৮ অক্টোবর পিরোজপুর মহকুমা এবং পরবর্তীতে ১৯৮৪ সালে জেলার রূপান্তরিত হয়।
চট্টগ্রাম বিভাগঃ-
১. বান্দরবন জেলাঃ-
বান্দরবন জেলার নামকরণ নিয়ে একটি কিংবদন্তি আছে, এলাকার বাসিন্দাদের মুখে প্রচলিত রূপকথায় অত্র এলাকায় এ সময় অসংখ্য বানর বাস করত। আর এ ই বানরগুলো শহরের প্রবেশ মুখে ছড়ার পাড়ে প্রতিনিয়ত লবণ খেতে আসত। এক সময় অতি বৃষ্টির কারণে ছড়ার পানি বৃদ্ধি পেলে বানরের দল ছড়া পাড় থেকে পাহাড়ে যেতে না পারায় একে অপরকে ধরে সারিবদ্ধভাবে ছড়া পার হয়। বানরের ছড়া পারাপারের এই র্দশ্য ধেকতে পায় এই জনপদের মানুষ। এই সময় থেকে জায়গাটি “ম্যাঅকছি ছড়া” হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। মার্মা ভাষায় ম্যাঅক শব্দটির অর্থ হল বানর আর ছিঃ শব্দটির অর্থ হল বাধঁ। কালের প্রবাহে বাংল ভাষাভাষির সাধারণ উচ্চারণে এই এলাকার নাম বান্দরবন হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। তবে মার্মা ভাষায় বান্দরবনের প্রকৃত নাম “রদ ক্যওচি চিম্রো’।
২. ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া জেলাঃ-
১৯৮৪ সালে ব্রাক্ষ্মবাড়িয়া জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। তার আগে এটি কুমিল্লা জেলার একটি মহকুমা ছিল। ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া জেলার নামকরণের সঠিক ইতিহাস খুঁজে পাইনি, আপনাদের জানা থাকলে দয়া করে জানাবেন।
৩. চাঁদপুর জেলাঃ-
১৭৭৯ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ শাসনামলে ইংরেজ জরিপকারী মেজর জেমস রেনেল তৎকালনি বাংলার যে মানচিত্র অংকন করেছিলেন তাতে চাঁদপুর নামে এক অখ্যাত জনপদ ছিল। তখন চাঁদপুরের দক্ষিণে নরসিংহপুর নামক ( বর্তমানে যা নদীগর্ভে বিলীন) স্থানে চাঁদপুরের অফিস-আদালত ছিল। পদ্মা ও মেঘনার সঙ্গমস্থল ছিল বতৃমান স্থান থেকে পাওয়া প্রায় ৬০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে। মেঘনা নদীর ভাঙ্গাগড়ার খেলায় এ এলাকা বর্তমানে বিলীন। বার ভূঁইয়াদের আমলে চাঁদপুর অঞ্চল বিক্রমপুরের জমিদার চাঁদরায়ের দখলে ছিল। ঐতিহাসিক জে.এম সেনগুপ্তের মতে চাঁদরায়ের নামানুসারে এ অঞ্চলের নাম চাঁদপুর। কথিত আছে চাঁপুরের (কোড়ালিয়া) পুরিন্দপুর মহল্লার চাঁদ ফকিরের নামানুসারে এ অঞ্চলের নাম চাঁদপুর। কারো কারো মতে, শাহ আহমেদ চাঁদ নামে একজন প্রশাষক দিল্লী থেকে পঞ্চদশ শতকে এখানে এসে একটি নদী বন্দর স্থাপন করেছিলেন। তাঁর নামানুসারে চাঁদপুর। ১৮৭৮ সালে প্রথম চাঁদপুর মহকুমার সৃষ্টি হয়। ১৮৯৬ সালের ১ অক্টোবর চাঁদপুর শহরকে পৌরসভা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৮৪ সালের ১৫ ই ফেব্রুয়ারী চাঁদপুর জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
৪. চট্টগ্রাম জেলাঃ-
চট্টগ্রামের প্রায় ৪৮ টি নামের খোঁজ পাওয়া যায়। এর মধ্যে রম্যভূমি, চাটিগাঁ, চাতগাও, রোসাং, চিতাগঞ্জ, জাটিগ্রাম ইত্যাদি। চট্টগ্রাম নামের উৎপত্তি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতপার্থক্য আছে, পন্ডিত বার্নোলির মতে, আরবি ‘শ্যাত (খন্ড) অর্থ বদ্বীপ, গাঙ্গ অর্থ গঙ্গা নদী থেকে চট্টগ্রাম নামের উৎপত্তি। অপর এক মতে ত্রয়োদশ শতকে এ অঞ্চলে ইসলাম প্রচার করতে এসেছিলেন বার জন আউলিয়া। তাঁরা একটি বড় বাতি বা চেরাগ জ্বালিয়ে উঁচু জায়গায় স্থাপন করেছিলেন। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় ‘চাটি’ অর্থ বাতি বা চেরাগ ্এবং গাঁও অর্থ গ্রাম। এ থেকে নাম হয় ”চাটিগাঁও”। এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা স্যার উইলিয়াম জোন্সের মতে, এ এলাকার একটি ক্ষুদ্র পাখির নাম থেকে চট্টগ্রাম নামের উৎপত্তি। ১৬৬৬ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রাম মোঘল সম্রাজের অংশ হয়। আরাকানদের পরাজিত করে মোঘল এর নাম রাখেন ইসলামাবাদ। ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দে মীর কাশিম আলী খান ইসলামাবাদকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে হস্তান্তর করেন। পরে কোম্পানি এর নাম রাখেন চিটাগাং।
৫. কুমিল্লা জেলাঃ-
প্রাচীনকালে এটি সমতট জনপদের অন্তর্গত ছিল এবং পরবর্তীতে এটি ত্রিপুরা রাজ্যের অংশ হয়। কুমিল্লা নামকরণের অনেকগুলো প্রচলিত লোককথা আছে, যার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য চৈনিক পরিব্রাজক ওয়াং চোয়াং কর্তৃক সমতট রাজ্য পরিভ্রমণের বৃত্তান্ত। তাঁর বর্ণনায় কিয়া-মল-ঙ্কিয়া
( Kiamolonkia) নামক স্থানের বর্ণনা রয়েছে তা থেকে কমলাঙ্ক বা কুমিল্লার নামকরণ হয়েছে। ১৯৮৪ সালে কুমিল্লা জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
৬. কক্সবাজার জেলাঃ-
আরব ব্যবসয়ী ও ধর্ম প্রচারকগণ ৮ম শতকে চট্টগ্রাম ও আকিব বন্দরে আগমন করেন। এই দুই বন্দরের মধ্যবর্তী হওয়ায় কক্সবাজার এলাকা আরবদের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসে। নবম শতাব্দীতে কক্সবাজার সহ বৃহত্তর চট্টগ্রাম হরিকেলার রাজা কান্তিদেব দ্বারা শাসিত হয়। ৯৩০ খ্রিস্টাব্দে আরাকান রাজা সুলাত ইঙ্গ চট্টগ্রাম দখল করে নেবার পর থেকে কক্সবাজার আরাকান রাজ্যের অংশ হয়। ১৭৮৪ সালে রার্মারাজ বোধাপায়া আরাকান দখল করে নেয়। ১৭৯৯ সালে বার্মারাজের হাত থেকে বাঁচার জন্য প্রায় ১৩ হাজার আরাকনি কক্সবাজার থেকে পালিয়ে যায়। এদর পূনর্বাসন করার জন্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি একজন হিরাম কক্সকে নিয়োগ করে। পূনর্বাসন প্রক্রিয়া শেষ হবার পূর্বেই হিরাম কক্স মৃত্যু বরণ করেন। পূনর্বাসন প্রক্রিয়ায় তাঁর অবদানের জন্য কক্স-বাজার নামক একটি বাজার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই কক্স-বাজার থেকে কক্সবাজার নামের উৎপত্তি।
৭. ফেনী জেলাঃ-
ফেনী নদীর নাম অনুসারে এ অঞ্চলের নাম রাখা হয় ফেনী। মধ্যযুগে কবি ও সাহিত্যিকদের কবিতা ও সাহিত্যে একটি বিশেষ নদীর স্রোদধা ও ফেনী পরাপারের ঘাট হিসেবে আমরা ফনী শব্দটি পাই। ষোড়শ শতাব্দীতে কবি কবীন্দ্র পরমেশ্বর পরাগলপুরের বর্ণনায় লিখেছেন, ‘ফনী নদীতে বেষ্টিত চারিধার, পূর্বে মহাগিরি পার পাই তার’। সতের শতকে মির্জা নাথানের ফার্সী ভাষায় রচিত ‘বাহরিস্থান-ই-গায়েরীতে’ ফনী শব্দ ফেনীতে পরিণত হয়। আটারো শতকের ষেষ ভাগে কবি আলী রেজা প্রকাশ কানু ফকির তাঁর পীরের বসতি হাজীগাঁওয়ের অবস্থান সম্পর্কে বর্ণনা দিতে গিয়ে লিখেছেন, ‘ফেনীর দক্ষিণে এক বর উপাম, হাজীগাঁও করিছিল সেই দেশের নাম’। মোহাম্মদ মুকিম তাঁর পৈতৃক বসতির বর্ণনাকালে বলেছেন,”ফেনীর পশ্চিমভঅগে জুগিদিয়া দেশ…………….। বলাবাহুল্য তাঁরাও নদী অর্থে ফেনী শব্দ ব্যবহার করেছেন। মুসলমান কবি-সাহিত্যিকদের ভাষায় আদি শব্দ ‘ফনী’ ফেনীতে পরিণত হয়েছে।
৮. খাগড়াছড়ি জেলাঃ-
খাগড়াছড়ি একটি নদীর নাম। নদীর পাড়ে খাগড়া বন থাকায় খাগড়াছড়ি নামে পরিচিতি লাভ করে।
৯. লক্ষীপুর জেলাঃ-
লক্ষীপুর জেলার নামকরণের সঠিক ইতিহাস খুঁজে পাইনি, আপনাদের জানা থাকলে দয়া করে জানাবেন।
১০. নোয়াখালী জেলাঃ-
নোয়াখালী জেলা প্রচীন নাম ছিল ভুলুয়া। নোয়াখালী সদর থানার আদি নাম ছিল সুধারাম। ইতিহাসবিদদের মতে, একবার ত্রিপুরার পাহাড় থেকে প্রবাহিত ডাকাতিয়া নদীর পানিতে ভুলুয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভয়াবহভঅবে প্লাবিত হয়ে ফসলি জমির ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি করে।এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের উপায় হিসেবে ১৬৬০ সালে একটি বিশাল খাল খনন করা হয়, যা পানি প্রবাহকে ডাকাতিয়া নদী হতে রামগঞ্ঝ, সোইমুড়ী ও চৌমুহনী হয়ে মেঘনা এবং ফেনী নদীর দিকে প্রবাহিত করে। এই বিশাল খালকে নোয়াখালীর ভাষায় ‘নোয়া (নুতুন) খাল’ বলা হত এর ফলে ‘ভুলুয়া’ নামটি পরিবর্তিত হয়ে ১৬৬৮ সালে নোয়াখালী নামে পরিচিতি লাভ করে।
১১. রাঙ্গামাটি জেলাঃ-
রাঙামাটি জেলা নামকরণ সম্পর্কে বিলু কবীরের লেখা ‘বাংলাদেশ জেলা : নামকরণের ইতিহাস’ বই থেকে জানা যায় তা হলো- এই এলাকায় পর্বতরাজি গঠিত হয়েছিল টারশিয়রি যুগে। এই যুগের মাটির প্রধান ব্যতিক্রম এবং বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর রঙ লালচে বা রাঙা। এই এলাকার গিরিমৃত্তিকা লাল এবং মাটিও রাঙা বলেই এই জনপদের নাম হয়েছে রাঙামাটি। প্রকৃতি সূচক এই নামকরণটির বিষয়ে অন্য প্রচলিত কথাপরম্পরা হলো- বর্তমান রাঙামাটি জেলা সদরের পূর্বদিকে একটি ছড়া ছিল, যা এখন হ্রদের মধ্যে নিমজ্জিত। এই হ্রদের স্বচ্ছ পানি যখন লাল বা রাঙামাটির উপর দিয়ে ঢাল বেয়ে প্রপাত ঘটাতো, তখন তাকে লাল দেখাতো। তাই এই ছড়ার নাম হয়েছিল ‘রাঙামাটি’। এই জেলা সদরের পশ্চিমে আরও একটি ছাড়া ছিল। অনুরূপ কারণে তার নাম দেয়া হয়েছিল ‘রাঙাপানি’। এই দুই রাঙা ছড়ার মোহনার বাঁকেই গড়ে উঠেছে বর্তমান জেলা শহর। যা মূলত ছিল অনাবাদী টিলার সমষ্টি এবং বহু উপত্যকার এক নয়নাভিরাম বিস্ময়ভূমি। এই দুটি ছড়া রাঙামাটি ও রাঙাপানি হতে ‘রাঙামাটি’ জেলার নামকরণ হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। ১৯৮৩ সালে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা গঠন করা হয়।
ঢাকা বিভাগঃ-
১. ঢাকা জেলাঃ-
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা মোঘল-পূর্ব যুগে কিছু গুরুত্বধারন করলেও শহরটি ইতিহাসে প্রসিদ্ধি লাভ করে মোঘল যুগে। ঢাকা নামের উৎপত্তি সম্পর্কে স্পষ্ট করে তেমন কিছু জানা যায় না। এ সম্পর্কে প্রচলিত মতগুলোর মধ্যে কয়েকটি নিম্নরূপঃ ক) একসময় এ অঞ্চলে প্রচুর ঢাক গাছ (বুটি ফুডোসা) ছিল; খ) রাজধানী উদ্বোধনের দিনে ইসলাম খানের নির্দেশে এখানে ঢাক অর্থাৎ ড্রাম বাজানো হয়েছিল; গ) ‘ঢাকাভাষা’ নামে একটি প্রাকৃত ভাষা এখানে প্রচলিত ছিল; ঘ) রাজতরঙ্গিণী-তে ঢাক্কা শব্দটি ‘পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র’ হিসেবে উল্লেখিত হয়েছে অথবা এলাহাবাদ শিলালিপিতে উল্লেখিত সমুদ্রগুপ্তের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ডবাকই হলো ঢাকা।
কথিত আছে যে, সেন বংশের রাজা বল্লাল সেন বুড়িগঙ্গা নদীর তীরবর্তী এলাকায় ভ্রমণকালে সন্নিহিত জঙ্গলে হিন্দু দেবী দুর্গার বিগ্রহ খুঁজে পান। দেবী দুর্গার প্রতি শ্রদ্ধাস্বরূপ রাজা বল্লাল সেন ঐ এলাকায় একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। যেহেতু দেবীর বিগ্রহ ঢাকা বা গুপ্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল তাই রাজা মন্দিরের নাম ঢাকেশ্বরী মন্দির। মন্দিরের নাম থেকেই কালক্রমে স্থানটির নাম ঢাকা হিসেবে গড়ে ওঠে।আবার অনেক ঐতিহাসিকদের মতে, মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর যখন ঢাকাকে সুবা বাংলার রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করেন, তখন সুবাদার ইসলাম খান আনন্দের বহিঃপ্রকাশ স্বরূপ শহরে ‘ঢাক’ বাজানোর নির্দেশ দেন। এই ঢাক বাজানোর কাহিনী লোকমুখে কিংবদন্দির রূপ ধারণ করে এবং তা থেকেই এই শহরের নাম ঢাকা হয়ে যায়। এখানে উল্লেখ্য যে, ১৬১০ খ্রিষ্টাব্দে ইসলাম খান চিশতি সুবাহ বাংলার রাজধানী রাজমহল থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করেন এবং সম্রাটের নামানুসারে এর নামকরণ করে জাহাঙ্গীরনগর।
২. ফরিদপুর জেলাঃ-
ফরিদপুরের নামকরণ করা হয়েছে এখানকার প্রখ্যাত সুফী সাধক শাহ শেখ ফরিদুদ্দিনের নামানুসারে।
৩. গাজীপুর জেলাঃ-
বিলু কবীরের লেখা ‘বাংলাদেশের জেলা : নামকরণের ইতিহাস’ বই থেকে জানা যায়, মহম্মদ বিন তুঘলকের শাসনকালে জনৈক মুসলিম কুস্তিগির গাজী এ অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেছিলেন এবং তিনি বহুদিন সাফল্যের সঙ্গে এ অঞ্চল শাসন করেছিলেন। এ কুস্তিগির/পাহলোয়ান গাজীর নামানুসারেই এ অঞ্চলের নাম রাখা হয় গাজীপুর বলে লোকশ্রুতি রয়েছে। আরেকটি জনশ্রুতি এ রকম সম্রাট আকবরের সময় চবি্বশ পরগনার জায়গিরদার ছিলেন ঈশা খাঁ। এই ঈশা খাঁরই একজন অনুসারীর ছেলের নাম ছিল ফজল গাজী। যিনি ছিলেন ভাওয়াল রাজ্যের প্রথম ‘প্রধান’। তারই নাম বা নামের সঙ্গে যুক্ত ‘গাজী’ পদবি থেকে এ অঞ্চলের নাম রাখা হয় গাজীপুর। গাজীপুর নামের আগে এ অঞ্চলের নাম ছিল জয়দেবপুর। এ জয়দেবপুর নামটি কেন হলো, কতদিন থাকল, কখন, কেন সেটা আর থাকল না সেটিও প্রাসঙ্গিক ও জ্ঞাতব্য। ভাওয়ালের জমিদার ছিলেন জয়দেব নারায়ণ রায় চৌধুরী। বসবাস করার জন্য এ জয়দেব নারায়ণ রায় চৌধুরী পীরাবাড়ি গ্রামে একটি গৃহ নির্মাণ করেছিলেন। গ্রামটি ছিল চিলাই নদীর দক্ষিণ পাড়ে। এ সময় ওই জমিদার নিজের নামের সঙ্গে মিল রেখে এ অঞ্চলটির নাম রাখেন ‘জয়দেবপুর’ এবং এ নামই বহাল ছিল মহকুমা হওয়ার আগ পর্যন্ত। যখন জয়দেবপুরকে মহকুমায় উন্নত করা হয়, তখনই এর নাম পাল্টে জয়দেবপুর রাখা হয়। উল্লেখ্য, এখনো অতীতকাতর-ঐতিহ্যমুখী স্থানীয়দের অনেকেই জেলাকে ‘জয়দেবপুর’ বলেই উল্লেখ করে থাকেন। গাজীপুর সদরের রেলওয়ে স্টেশনের নাম এখনো ‘জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশন’। তবে বিস্তারিত আলোচনায় গেলে বলতেই হয়, গাজীপুরের আগের নাম জয়দেবপুর এবং তারও আগের নাম ভাওয়াল। গাজীপুরকে ১৯৮৪খ্রিস্টাব্দের ১ মার্চ জেলা এবং ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের ৭ জানুয়ারী রোজ: সোমবার সিটি কর্পোরেশন ঘোষণা করা হয়।
৪. গোপালগঞ্জ জেলাঃ-
গোপালগঞ্জ জেলা শহরের রয়েছে প্রাচীন ইতিহাস। অতীতের রাজগঞ্জ বাজার আজকের জেলা শহর গোপালগঞ্জ। আজ থেকে প্রায় শতাব্দীকাল পূর্বে শহর বলতে যা বুঝায় তার কিছুই এখানে ছিলোনা। এর পরিচিতি ছিলো শুধু একটি ছোট্ট বাজার হিসেবে। এঅঞ্চলটি মাকিমপুর ষ্টেটের জমিদার রানী রাসমণির এলাকাধীন ছিলো। উল্লেখ্য রানী রাসমণি একজন জেলের মেয়ে ছিলেন। সিপাই মিউটিনির সময় তিনি একজন উচ্চ পদস্থ ইংরেজ সাহেবের প্রাণ রক্ষা করেন। পরবর্তীতে তারই পুরস্কার হিসাবে বৃটিশ সরকার রাসমণিরকে মাকিমপুর ষ্টেটের জমিদারী প্রদার করেন এবং তাঁকে রানী উপাধিতে ভূষিত করেন। রানী রাসমণির এক নাতির নাম ছিলো নব-গোপাল তিনি তাঁর স্নেহাস্পদ নাতির নাম এবং পুরানো ইতিহাসকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য নাতিন নামের ‘গোপাল’ অংশটি প্রথমে রেখে তার সাথে রাজগঞ্জের ‘গঞ্জ’ যোগ করে এ জাযগাটির নতুর নামকরণ করেন গোপালগঞ্জ। ১৯৮৪ সালে ফরিদপুর জেলার মহকুমা থেকে গোপালগঞ্জ জেলা সৃষ্টি হয়।
৫. জামালপুর জেলাঃ-
সাধক দরবেশ হযরত শাহ জামাল (র) এর পূণ্যস্মৃতি বিজড়িত নয়নাভিরাম সৌন্দর্যমন্ডিত গরো পাহাড়ের পাদদেশে যমুনা-ব্রক্ষ্মপুত্র বিধৌত বাংলাদেশের ২০-তম জেলা জামালপুর। হযরত শাহ জামাল (র) এর নামানুসারে জামালপুরের নামকরণ হয়।
৬. কিশোরগঞ্জ জেলাঃ-১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে কিশোরগঞ্জ মহকুমার জন্ম হয়। মহকুমার প্রথম প্রশাসক ছিলেন মিঃ বকসেল। বর্তমান কিশোরগঞ্জ তৎকালীন জোয়ার হোসেনপুর পরগনার অন্তর্ভক্ত ছিল। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকেও কিশোরগঞ্জ এলাকা ‘কাটখালী’ নামে পরিচিত ছিল। ইতিহাসবিদদের ধারণা ও জনশ্রুতি মতে এ জেলার জমিদার ব্রজকিশোর মতান্তরে নন্দকিশোর প্রামানিকের ‘কিশোর’ এবং তাঁর প্রতিষ্ঠিত হাট বা গঞ্জের ‘গঞ্জ’ যোগ করে কিশোরগঞ্জ নামকরণ করা হয়।
৭. মাদারীপুর জেলাঃ-
মাদারীপুর জেলা একটি ঐতিহাসিক সমৃদ্ধ জনপদ ছিল। পঞ্চদশ শতাব্দীতে সাধক হযরত বদরুদ্দিন শাহ মাদার (র) এর নামানুসারে এই জেলার নামকরণ করা হয়। প্রাচীনকালে মাদারীপুরের নাম ছিল ইদিলপুর। ১৯৮৪ সালে মাদারীপুর জেলা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।
৮. মানিকগঞ্জ জেলাঃ-
মূরত সংস্কৃত ‘মানিক্য’ শব্দ থেকে মানিক শব্দটি এসেছে। মানিক হচ্ছে চুনি পদ্মরাগ। গঞ্জ শব্দটি ফরাসী। মানিকগঞ্জের নামের ঋৎপত্তি ইতিহাস আজও রহস্যবৃত। অষ্টাদশ শতকের প্রথমার্ধে সুফি দরবেশ মানিক শাহ সিংগাইর উপজেলার মানিকনগরে আসেন এবং খানকা প্রতিষ্ঠা করে ইসলাম ধর্ম প্রচার শুরু করেন।কারও মতে দূর্ধর্ষ পাঠান সর্দার মানিক ঢালীর নামানুসারে মানিকগঞ্জ নামের উৎপত্তি। আবার কারো মতে, নবাব সিরাজ উদ-দৌলার বিশাবাস ঘাতক মানিক চাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বরূপ তার নমানুসারে ১৮৪৫ সালের মে মাসে মানিকগঞ্জ মহকুমার নামকরণ হয়। মানিকগঞ্জ মহকুমার নামকরণ সম্পর্কীত উল্লেখ্য তিনটি পৃথক স্থানীয় জনশ্রুতি এবং অনুমান নির্ভর। এর কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি পাওয়া যায়নি, তবে মানিক শাহের নামানুসারে মানিকগঞ্জ মহকুমার নামকরণ সম্পর্কীত জনশ্রুতি এবং ঘটনা প্রবাহ থেকে যে চিত্র পাওয়া যায় তাই সঠিক বলে ধরা হয়।
৯. মুন্সীগঞ্জ জেলাঃ-
মুন্সিগঞ্জে প্রাচীন নাম ছিল ইদ্রাকপুর। মোঘল শাসনামলে এই ইদ্রাকপুর গ্রামে মুন্সী হায়দার হোসেন নামে একজন ব্যক্তি ছিলেন। তিনি মোঘল শাসক দ্বারা ফৌজদার নিযুক্ত ছিলেন। অত্যন্ত সজ্জন ও জনহিতৈষী মুন্সী হায়দার হোসেনের নামে ইদ্রাকপুরের নাম হয় মুন্সীগঞ্জ। কারো কারো মতে জমিদার এনায়েত আলী মুন্সীর নামানুসারে মুন্সীগঞ্জে নামকরণ করা হয়।
১০. ময়মনসিংহ জেলাঃ-
ময়মনসিংহ জেলার নাম নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন মত প্রচলিত আছে। ষোড়শ শতাব্দীতে বাংলার স্বাধীন সুলতান সৈয়দ আলাউদ্দিন হোসেন শাহ তাঁর পুত্র সৈয়দ নাসির উদ্দিন নসরত শাহ’র জন্য এ অঞ্চলে একটি নুতুন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সেই থেকে নসরতশাহী বা নাসিরাবাদ নামের সৃষ্টি। সলিম যুগের উৎস হিসেবে নাসিরাবাদ, নাম আজও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোথাও নাসিরাবাদ কথাটি উল্লেখ্য করা হচ্ছে না। ১৭৭৯ সালে প্রকাশিত রেনেল এর ম্যাপে মোমেসিং নামটি ‘ময়মনসিংহ’ অঞ্চলকেই নির্দেশ করে। তার আগে আইন-ই-আকবরীতে ‘মিহমানশাহী’ এবং ‘মনমনিসিংহ’ সকার বাজুহার পরগনা হিসেবে লিখিত আছে। যা বর্তমান ময়মনসিংহকেই ধরা হয়।
১১. নারায়ণগঞ্জ জেলাঃ-
১৭৬৬ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা বিকন লাল পান্ডে( বেণু ঠাকুর বা লক্ষীনায়ায়ণ ঠাকুর) ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নিকট থেকে এ অঞ্চলের মালিকানা গ্রহণ করে। তিনি প্রভু নারায়ণের সেবার ব্যয়ভার বহনের জন্য একটি উইলের মাধ্যমে শীতলক্ষা নদীর তীরে অবস্থিত মার্কেটকে দেবোত্তর সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করেন। তাই পরবর্তীকালে এ স্থানের নাম হয় নারায়ণগঞ্জ।
১২. নেত্রকোণা জেলাঃ-
নেত্রকোণার নামকরণ হয়েছে নাটেরকোণা নামক গ্রামের নাম থেকে।
১৩. নরসিংদী জেলাঃ-
কথিত আছে, প্রাচীনকালে এ অঞ্চলটি নরসিংহ নামক একজন রাজার শাসনাধীন ছিল। আনুমানিক পঞ্চদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে রাজা নরসিংহ প্রাচীন ব্যক্ষ্মপুত্র নদের পশ্চিম তীরে নরসিংহপুর নামে একটি ছোট নগর স্থাপন করেছিলেনঅ তাঁরই নামানুসারে নরসিংদী নামটি আবির্ভূত হয়। নরসিংহ নামের সাথে ‘দী’ যুক্ত হয়ে নরসিংদী হয়েছে। নরসিংহদী শব্দের পরিবর্তিত রূপই “নরসিংদী”।
১৪. রাজবাড়ী জেলাঃ-
রাজা সূর্য্য কুমারের নামানুসারে রাজবাড়ীর নামকরণ করা হয়। রাজা সূর্য্য কুমারের পিতামহ প্রভুরাম নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার রাজকর্মী থাকাকালীন কোন কারণে ইংরেজদের বিরাগভাজন হলে পলাশীর যুদ্ধের পর লক্ষীকোলে এস আত্মগোপন করেন। পরে তাঁর পুত্র দ্বিগেন্দ্র প্রসাদ এ অঞ্চলে জমিদারী গড়ে তোলেন। তাঁরই পুত্র রাজা সূর্য্য কুমার ১৮৮৫ সালে জনহিতকর কাজের জন্য রাজা উপাধি প্রাপ্ত হন। ১৯৮৪ সালে ১মার্চ জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
১৫. শরীয়তপুর জেলাঃ-
বৃটিশ বিরোধী তথা ফরায়েজী আন্দোলনের অন্যতম নেতা হাজী শরীয়ত উল্লাহর নামানুসারে শরীয়তপুরের নামকরণ করা হয়। ১৯৮৪ সালে ১লা মার্চ শরীয়তপুর জেলা শুভ উদ্বোধন করেন তৎকালীন তথ্য মন্ত্রী জনাব নাজিম উদ্দিন হাসিম।
১৬. শেরপুর জেলাঃ-
বাংলার নবাবী আমলে গাজী বংশের শেষ জমিদার শের আলী গাজী দশ কাহনিয়া অঞ্চল দখল করে স্বাধীনভাবে রাজত্ব করেন। এই শের আলী গাজীর নামে দশ কাহনিয়ার নাম হয় শেরপুর।
১৭. টাঙ্গাইল জেলাঃ-
টাঙ্গাইলের নামকরণ বিষয়ে রয়েছে বহুজনশ্রুতি ও নানা মতামত। ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত রেনেল তাঁর মানচিত্রে এ সম্পূর্ণ অঞ্চলকেই আটিয়া বলে দেখিয়েছেন। ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দের আগে টাঙ্গাইল নামে কোনো স্বতন্ত্র স্থানের পরিচয় পাওয়া যায় না। টাঙ্গাইল নামটি পরিচিতি লাভ করে ১৫ নভেম্বর ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে মহকুমা সদর দপ্তর আটিয়া থেকে টাঙ্গাইলে স্থানান্তরের সময় থেকে।
টাঙ্গাইলের ইতিহাস প্রণেতা খন্দকার আব্দুর রহিম সাহেবের মতে, ইংরেজ আমলে এদেশের লোকেরা উচু শব্দের পরিবর্তে ‘টান’ শব্দই ব্যবহার করতে অভ্যস্ত ছিল বেশি। এখনো টাঙ্গাইল অঞ্চলে ‘টান’ শব্দের প্রচলন আছে। এই টানের সাথে আইল শব্দটি যুক্ত হয়ে হয়েছিল টান আইল। আর সেই টান আইলটি রূপান্তরিত হয়েছে টাঙ্গাইলে। টাঙ্গাইলের নামকরণ নিয়ে আরো বিভিন্নজনে বিভিন্ন সময়ে নানা মত প্রকাশ করেছেন। কারো কারো মতে, বৃটিশ শাসনামলে মোগল প্রশাসন কেন্দ্র আটিয়াকে আশ্রয় করে যখন এই অঞ্চল জম-জমাট হয়ে উঠে। সে সময়ে ঘোড়ার গাড়িছিল যাতায়াতের একমাত্র বাহন, যাকে বর্তমান টাঙ্গাইলের স্থানীয় লোকেরা বলত ‘টাঙ্গা’। বর্তমান শতকের মাঝামাঝি পর্যন্তও এ অঞ্চলের টাঙ্গা গাড়ির চলাচল স্থল পথে সর্বত্র। আল শব্দটির কথা এ প্রসঙ্গে চলে আসে। বর্তমান টাঙ্গাইল অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানের নামের সাথে এই আল শব্দটির যোগ লক্ষ্য করা যায়। আল শব্দটির অর্থ সম্ভবত সীমা নির্দেশক যার স্থানীয় উচ্চারণ আইল। একটি স্থানকে যে সীমানা দিয়ে বাঁধা হয় তাকেই আইল বলা হয়। টাঙ্গাওয়ালাদের বাসস্থানের সীমানাকে ‘টাঙ্গা+আইল’ এভাবে যোগ করে হয়েছে ‘টাঙ্গাইল’ এমতটি অনেকে পোষণ করেন। আইল শব্দটি কৃষিজমির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এই শব্দটি আঞ্চলিক ভাবে বহুল ব্যবহৃত শব্দ। টাঙ্গাইলের ভূ-প্রকৃতি অনুসারে স্বাভাবিক ভাবে এর ভূমি উঁচু এবং ঢালু। স্থানীয়ভাবে যার সমার্থক শব্দ হলো টান। তাই এই ভূমিরূপের কারণেই এ অঞ্চলকে হয়তো পূর্বে ‘টান আইল’ বলা হতো। যা পরিবর্তীত হয়ে টাঙ্গাইল হয়েছে।
খুলনা বিভাগঃ-
১. বাগেরহাট জেলাঃ-
এক সময় বাগেরহাটের নাম ছিল খলিফাতাবাদ বা প্রতিনিধির শহর। খানজাহান আলী (রঃ) গৌড়ের সুলতানদের প্রতিনিধি হিসেবে এ অঞ্চল শাসন করতেন। কেউ কেউ মনে করেন, বরিশালের শাসক আঘা বাকের এর নামানুসারে বাগেরহাট হয়েছে। কেউবা বলেন, পাঠান জায়গীদার বাকির খাঁ এর নামানুসারে বাগেরহাট হয়েছে। আবার কারো মতে, বাঘ শব্দ হতে বাগেরহাট নাম হয়েছে। জনশ্রুতি আছে খানজাহান আলী (রঃ) এর একটি বাগ(বাগান, ফার্সী শব্দ) বা বাগিচা ছিল। এ বাগ শব্দ হতে বাগেরহাট। কাো মতে, নদীর বাঁকে হাট বসতো বিধায় বাঁকেরহাট। বাঁকেরহাট হহতে বাগেরহাট।
২. চুয়াডাঙ্গা জেলাঃ-
চুয়াডাঙ্গার নামকরণ সম্পর্কে কথিত আছে যে, এখানকার মল্লিক বংশের আদিপুরুষ চুঙ্গো মল্লিকের নামে এ জায়গার নাম চুয়াডাঙ্গা হয়েছে। ১৭৪০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে চুঙ্গো মল্লিক তাঁর স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে ভারতের নদীয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলার সীমানার ইটেবাড়ি- মহারাজপুর গ্রাম থেকে মাথাভাঙ্গা নদীপথে এখানে এস প্রথম বসতি গড়েন। ১৭৯৭ সালের এক রেকর্ডে এ জায়গার নাম চুঙ্গোডাঙ্গা উল্লেখ রয়েছে। ফারসি থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করার সময় উচ্চারণের বিকৃতির কারণে বর্তমান চুয়াডাঙ্গা নামটা এসেছে। চুয়াডাঙ্গা নামকরণের আরো দুটি সম্ভাব্য কারণ প্রচলিত আছে। চুয়া < চয়া চুয়াডাঙ্গা হয়েছে।
৩. যশোর জেলাঃ- ১৭৮১ সালে যশোর একটি পৃথক জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং এটিই হচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম জেলা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম স্বাধীন হওয়া জেলাটি যশোর। যশোর, সমতটের একটা প্রাচীন জনপদ। নামটি অতি পুরানো। যশোর নামের উৎপত্তি সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত পাওয়া যায়। যশোর (জেসিনরে) আরবি শব্দ যার অর্থ সাকো। অনুমান করা হয় কসবা নামটি পীর খানজাহান আলীর দেওয়া (১৩৯৮ খৃঃ)। এককালে যশোরের সর্বত্র নদী নালায় পরিপূর্ণ ছিল। পূর্বে নদী বা খালের উপর সাকো নির্মিত হতো। খানজাহান আলী বাঁশের সাকো নির্মাণ করে ভৈরব নদী পার হয়ে মুড়লীতে আগমন করেন বলে জানা যায়। এই বাঁশের সাকো থেকে যশোর নামের উৎপত্তি। তবে এই মতে সমর্থকদের সংখ্যা খুবই কম। ইরান ও আরব সীমান্তে একটি স্থানের নাম যশোর যার সাথে এই যশোরের কোন সম্পর্ক স্থাপন করা যায় না। খানজাহান আলীর পূর্ব থেকেই যশোর নাম ছিল। অনেকে অভিমত ব্যক্ত করেন যে, প্রতাপদিত্যের পতনের পর চাঁচড়ার রাজাদের যশোরের রাজা বলা হত। কেননা তারা যশোর রাজ প্রতাপাদিত্যের সম্পত্তির একাংশ পুরস্কার স্বরূপ অর্জন করেছিলেন। এই মতও সঠিক বলে মনে হয়। জে, ওয়েস্টল্যাণ্ড তাঁর যশোর প্রতিবেদনের ১৯৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন, রাজা প্রতাপাদিত্য রায়ের আগে জেলা সদর কসবা মৌজার অর্ন্তভুক্ত ছিল। বনগাঁ-যশোর পিচের রাস্তা ১৮৬৬-১৮৬৮ কালপর্বে তৈরী হয়। যশোর-খুলনা ইতিহাসের ৭৬ পাতায় লেখা আছে “প্রতাপাদিত্যের আগে লিখিত কোন পুস্তকে যশোর লেখা নাই”। সময়ের বিবর্তনে নামের পরিবর্তন স্বাভাবিক।
৪. ঝিনাইদহ জেলাঃ- প্রাচীনকালে বর্তমান ঝিনাইদহের উত্তর-পশ্চিম দিকে নবগঙ্গা নদীর ধারে ঝিনুক কুড়ানো শ্রমিকের বসতি গড়ে ওঠে বলে জানা যায। কলকাতা থেকে ব্যবসায়ীরা ঝিনুকের মুক্তা সঙগ্রহরের জন্য এখানে ঝিনুক কিনতে আসতো। সে সময় ঝিনুক প্রাপ্তির স্থানটিকে ঝিনুকদহ বলা হত। অনেকের মতে ঝিনুককে আঞ্চলিক ভাষায় ঝিনেই বা ঝিনাই বলে। দহ অর্থ বড় জলাশয়, দহ ফার্সী শব্দ যার অর্ত গ্রাম। সেই অর্থে ঝিনুক দহ বলতে ঝিনুকের জলাশয় অথবা ঝিনুকের গ্রাম। ঝিনুক এবং দহ থেকেই ঝিনুকদহ বা ঝিনেইদহ যা রূপান্তরিত হয়ে আজকের এই ঝিনাইদহ।
৫. খুলনা জেলাঃ- হযরত পীর খানজাহান আলীর (র.) স্মৃতি বিজড়িত ও ভৈরব-রূপসা বিধৌত পৌর শহর খুলনার ইতিহাস নানাভাবে ঐতিহ্য মন্ডিত। খুলনা নামকরণের উৎপত্তি সম্বন্ধে নানান মত রয়েছে। সবচেয়ে বেশি আলোচিত মতগুলো হলো : মৌজা ‘কিসমত খুলনা’ খুলনা খুলনা; ধনপতি সাওদাগরের দ্বিতীয় স্ত্রী খুল্লনার নামে নির্মিত ‘খুল্লনেশ্বরী কালী মন্দির’ থেকে খুলনা; ১৭৬৬ সালে ‘ফলমাউথ’ জাহাজের নাবিকদের উদ্ধারকৃত রেকর্ডে লিখিত Culnea শব্দ থেকে খুলনা। ইংরেজ আমলের মানচিত্রে লিখিত Jessore-Culna শব্দ থেকে খুলনা,- কোনটি সত্য তা গবেষকরা নির্ধারণ করবেন।
৬. কুষ্টিয়া জেলাঃ- কুষ্টিয়া জেলার নামকরণ নিয়ে নানা কাহিনী প্রচলিত আছে, কুষ্টিয়ায় এক সময় কোস্টার(পাট) চাষ হতো বলে কোস্ট শব্দ থেকে কুষ্টিয়ার উৎপত্তি। হেমিলটনের গেজেটিয়ারে উল্লেখ্য করেন যে, স্থানীয় জনগণ একে কুষ্টি বলে ডাকত। কুষ্টি থেকে কুষ্টিয়া নামকরণ হয়েছে। ১৯৮৪ সালে ৬ টি থানা নিয়ে কুষ্টিয়া জেলা গঠিত হয়।
৭. মাগুরা জেলাঃ- আজকের যেখানে মাগুরা জেলা শহর গড়ে ওঠেছে প্রাচীনকাল থেকেই এর গুরুত্ব অত্যধিক ছিল। কখন থেকে মাগুরা নাম হয়েছে তার সঠিক হিসেব মিলানো কষ্টকর। মাগুরা প্রাচীন আমলের একটি গ্রাম। মাগুরা দু’টি অংশে বিভক্ত ছিল। মহকুমা সদরের পূর্বে মাগুরা ও পশ্চিমে ছিল দরি মাগুরা। দরি শব্দের অর্থ মাদুর বা সতরঞ্জি। দরি মাগুরায় মাদুর তৈরি সম্প্রদায়ের লোক বাস করতো বলে নাম হয়েছিল দরি মাগুরা। ধর্মদাস নামে জনৈক মগ আরাকান খেকে এসে আগুরা শহরের পূর্ভ কোণের সোজাসুজি গড়াই নদীর তীরে খুলুমবাড়ি মৌজা প্রভুতি দখল করে। লোকে তাকে মগ জায়গীর বলে আখ্যায়িত করেছিল। অনেকের মতে মগরা থেকে মাগুরা নামের উৎপত্তি। লোক মুখে শোনা যায় এককালে মাগুরা এলাকায় বড় বিল ছিল সেই বিলে পাওয়া যেতো প্রচুর মাগুর মাছ। এই মাগুর মাছের নাম থেকেও মাগুরা নামের উৎপত্তি হতে পারে। মাগুরা নামের উৎপত্তি নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধে্য মতভেদ রয়েছে। ১৯৮৪ সালের ১ মার্চ মাগুরা মহকুমাকে জেলায় উন্নীত করা হয়।
৮. মেহেরপুর জেলাঃ- মেহেরপুর নামকরণ সম্পর্কে এ পর্যন্ত দুটি অনুমান ভিত্তিক তথ্য পাওয়া গেছে। প্রথমটি ইসলাম প্রচারক মরবেশ মেহের আলী নামীয় জনৈক ব্যক্তির নামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মেহেরপুর রাখা হয়। দ্বিতীয়টি বচনকার মিহির ও তাঁর পুত্রবধু খনা এই শহরে বাস করতেন বলে প্রচলিত আছে। মিহিরের নাম থেকে মিহিরপুর এবং পরবর্তীতে তা মেহেরপুর হয়। ১৯৮৪ সালের ২৪ শে ফেব্রুয়ারী মেহেরপুর জেলার মর্যাদা লাভ করে।
৯. নড়াইল জেলাঃ- নড়াইল নামকরণ নিয়ে ঐতিহাসিকবিদরা ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করেন। কিংবদন্তী আছে, নড়িয়াল ফকিরের আশীর্বাদপুষ্ট নড়ি থেকে নড়িয়াল নামের উৎপত্তি। নড়িয়াল ফকিরের আশীর্বাদপুষ্ট তাই নাম হয় নড়িয়াল। পরবর্তীতে লোকমুখে বিকৃত হয়ে নড়িয়াল থেকে নড়াইল।
১০. সাতক্ষীরা জেলাঃ- সাতক্ষীরা জেলার আদি নাম ছিল সাতঘরিয়া। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সময় বিষ্ণুরাম চক্রবর্তী নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের কর্মচারী হিসেবে ১৭৭২ সালে নিলামে এই পরগনা কিনে গ্রাম স্থাপন করেন। তাঁর পুত্র প্রাণনাথ চক্রবর্তী সাতঘর কুলীন ব্রাক্ষ্মণ এনে এই পরগনায় প্রতিষ্ঠিত করেন তা থেকে সাতঘরিয়া নাম হয়।
রাজশাহী বিভাগঃ-
১. বগুড়া জেলাঃ- ১২৮১-১২৯০ খ্রিস্টাব্দে দিল্লরি সুলতান গিয়াসউদ্দীন বলবনের ২য় পুত্র সুলতান নাসিরউদ্দীন বগরা খান বাংলার শাসনকর্তা নিযুক্ত হন। তাঁর নামানুসারে বগুড়া জেলার নামকরণ করা হয়েছে।
২. জয়পুরহাট জেলাঃ- জেলার নামকরণের সঠিক ইতিহাস খুঁজে পাইনি, আপনাদের জানা থাকলে দয়া করে জানাবেন।
৩. নওগাঁ জেলাঃ- নওগাঁ শব্দের উৎপত্তি হয়েছে ‘নও’(নুতুন) ও ‘গাঁ (গ্রাম) শব্দ থেকে শব্দ দুটি ফরাসী। নওগাঁ শব্দের অর্থ হলো নুতুন গ্রাম। ১৯৮৪ সালে ১ মার্চ নওগাঁ ১১ টি উপজেলা নিয়ে জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
৪. নাটোর জেলাঃ- নাটোর জেলার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে নারদ নদী কথিত আছে এই নদীর নাম থেকেই ‘নাটোর’ শব্দটির উৎপত্তি। ভাষা গবেষকদের মতে নাতোর হচ্ছে মুল শব্দ। উচ্চারণগত কারণে নাটোর হয়েছে। নাটোর অঞ্চল নিম্নমুখী হওয়ায় চলাচল করা ছিল প্রায় অসম্ভব। জনপদটির দুর্গমতা বোঝাতে বলা হত নাতোর। নাতোর অর্থ দুর্গম। আরেকটি জনশ্রুতি আছে জমিদারদের পৃষ্ঠপোষকতার আমোদ-প্রমোদের জন্য গড়ে উঠেছিল বাইজিবাড়ি, নটিপাড়া জাতীয় সংস্কৃতি। এই নটি পাড়া থেকে নাটোর শব্দটির উৎপদ্দি হতে পারে বলে ধারণা করা হয়। ১৯৮৪ সালে নাটোর পূর্ণাঙ্গ জেলা লাভ করে।
৫. নবাবগঞ্জ জেলাঃ- ‘চাপাইনবাবগঞ্জ’ নামটি সাম্প্রতিকালের।এই এলাকা ‘নবাবগঞ্জ নামে পরিচিত ছিল। চাঁপাইগঞ্জ নামকরণ সম্পর্কে জানা যায়, প্রাক-ব্রিটিশ আমলে এ অঞ্চল ছিল মুর্শিদাবাদের নবাবদের বিহারভূমি এবং এর অবস্থান ছিল বর্তমান সদর উপজেলার দাউদপুর মৌজায়। নবাবরা তাঁদের পাত্র-মিত্র ও পরিষদ নিয়ে এখানে শিকার করতে আসতেন বলে এ স্থানের নাম হয় নবাবগঞ্জ। চাঁপাইনবাবগঞ্জ নামের ইতিবৃত্ত নবাব আমলে মহেশপুর গ্রামে চম্পাবতী মতান্তরে ‘চম্পারানী বা চম্পাবাঈ’ নামে এক সুন্দরী বাঈজী বাস করতেন। তাঁর নৃত্যের খ্যাতি আশেপাশে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং তিনি নবাবের প্রিয়পাত্রী হয়ে ওঠেন। তাঁর নামানুসারে এই জায়গার নাম ‘চাঁপাই”। এ অঞ্চলে রাজা লখিন্দরের বাসভূমি ছিল। লখিন্দরের রাজধানীর নাম ছিল চম্পক। চম্পক নাম থেকেই চাঁপাই। ভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর (১৮৮৫-১৯৬৯ খ্রি) ‘বাঙলা সাহিত্যের কথা’ গ্রন্থের প্রথম খন্ডে বর্ণিত লাউসেনের শত্রুরা জামুতিনগর দিয়ে গৌড়ে প্রবেশ করে। বর্তমান ভোলাহাট উপজেলার জামবাড়িয়া পূর্বে জামুতিনগর নামে পরিচিত ছিল। এসবের ওপর ভিত্তি করে কোনো কোনো গবেষক চাঁপাইকে বেহুলার শ্বশুরবাড়ি চম্পকনগর বলে স্থির করেছেন এবং মত দিয়েছেন যে, চম্পক নাম থেকেই চাঁপাই নামের উৎপত্তি।
৬. পাবনা জেলাঃ- ‘পাবনা’ নামকরণ নিয়ে কিংবদন্তির অন্ত নেই। এক কিংবদন্তি মতে গঙ্গার ‘পাবনী’ নামক পূর্বগামিনী ধারা হতে পাবনা নামের উৎপত্তি হয়েছে। অপর একটি সূত্রে জানা যায় ‘পাবন’ বা ‘পাবনা’ নামের একজন দস্যুর আড্ডাস্থলই এক সময় পাবনা নামে পরিচিতি লাভ করে। অপরদিকে কিছু ঐতিহাসিক মনে করেন, ‘পাবনা’ নাম এসেছে ‘পদুম্বা’ থেকে। কালক্রমে পদুম্বাই স্বরসঙ্গতি রক্ষা করতে গিয়ে বা শব্দগত অন্য ব্যুৎপত্তি হয়ে পাবনা হয়েছে। ‘পদুম্বা’ জনপদের প্রথম সাক্ষাৎ মিলে খ্রিষ্টীয় একাদশ শতকে পাল নৃপতি রামপালের শাসনকালে।
৭. রাজশাহী জেলাঃ- এই জেলার নামকরণ নিয়ে প্রচুর মতপার্থক্য রয়েছে। তবে ঐতিহাসিক অক্ষয় কুমার মৈত্রেয়র মতে রাজশাহী রাণী ভবানীর দেয়া নাম। অবশ্য মিঃ গ্রান্ট লিখেছেন যে, রাণী ভবানীর জমিদারীকেই রাজশাহী বলা হতো এবং এই চাকলার বন্দোবস্তের কালে রাজশাহী নামের উল্লেখ পাওয়া যায়। পদ্মার উত্তরাঞ্চল বিস্তীর্ন এলাকা নিয়ে পাবনা পেরিয়ে ঢাকা পর্যন্ত এমনকি নদীয়া, যশোর, বর্ধমান, বীরভূম নিয়ে এই এলাকা রাজশাহী চাকলা নামে অভিহিত হয়। অনুমান করা হয় ‘রামপুর’ এবং ‘বোয়ালিয়া’ নামক দু’টি গ্রামের সমন্বয়ে রাজশাহী শহর গ’ড়ে উঠেছিল। প্রাথমিক পর্যায়ে ‘রামপুর-বোয়ালিয়া’ নামে অভিহিত হলেও পরবর্তীতে রাজশাহী নামটিই সর্ব সাধারণের নিকট সমধিক পরিচিতি লাভ করে। বর্তমানে আমরা যে রাজশাহী শহরের সঙ্গে পরিচিত, তার আরম্ভ ১৮২৫ সাল থেকে। রামপুর-বোয়ালিয়া শহরের নামকরণ রাজশাহী কী করে হলো তা নিয়ে বহু মতামত রয়েছে। রাজাশাহী শব্দটি বিশ্লেষণ করলে দুটি ভিন্ন ভাষার একই অর্থবোধক দুটি শব্দের সংযোজন পরিলতি হয়। সংস্কৃত ‘রাজ’ ও ফারসি ‘শাহ’ এর বিশেষণ ‘শাহী’ শব্দযোগে ‘রাজশাহী’ শব্দের উদ্ভব, যার অর্থ একই অর্থাৎ রাজা বা রাজা-রাজকীয় বা বা বাদশাহ বা বাদশাহী। তবে বাংলা ভাষায় আমরা একই অর্থের অনেক শব্দ দু-বার উচ্চারণ করে থাকি। যেমন– শাক-সবজি, চালাক-চতুর, ভুল-ভ্রান্তি, ভুল-ত্র“টি, চাষ-আবাদ, জমি-জিরাত, ধার-দেনা, শিক্ষা-দীক্ষা, দীন-দুঃখী, ঘষা-মাজা, মান-সম্মান, দান-খয়রাত, পাহাড়-পর্বত, পাকা-পোক্ত, বিপদ-আপদ ইত্যাদি। ঠিক তেমনি করে অদ্ভূত ধরনের এই রাজশাহী শব্দের উদ্ভবও যে এভাবে ঘটে থাকতে পারে তা মোটেই উড়িয়ে দেয়া যায় না। এই নামকরণ নিয়ে অনেক কল্পকাহিনীও রয়েছে। সাধারণভাবে বলা হয় এই জেলায় বহু রাজা-জমিদারের বসবাস, এজন্য এ জেলার নাম হয়েছে রাজশাহী। কেউ বলেন রাজা গণেশের সময় (১৪১৪-১৪১৮) রাজশাহী নামের উদ্ভব। ১৯৮৪ সালে রাজশাহীর ৪টি মহকুমাকে নিয়ে রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর এবং নবাবগঞ্জ- এই চারটি স্বতন্ত্র জেলায় উন্নীত করা হয়।
৮. সিরাজগঞ্জ জেলাঃ- বেলকুচি থানায় সিরাজউদ্দিন চৌধুরী নামক এক ভূস্বামী (জমিদার) ছিলেন। তিনি তাঁর নিজ মহালে একটি ‘গঞ্জ’ স্থাপন করেন। তাঁর নামানুসারে এর নামকরণ করা হয় সিরাজগঞ্জ। কিন্তু এটা ততটা প্রসিদ্ধি লাভ করেনি। যমুনা নদীর ভাঙ্গনের ফলে ক্রমে তা নদীগর্ভে বিলীন হয় এবং ক্রমশঃ উত্তর দিকে সরে আসে। সে সময় সিরাজউদ্দীন চৌধুরী ১৮০৯ সালের দিকে খয়রাতি মহল রূপে জমিদারী সেরেস্তায় লিখিত ভুতের দিয়ার মৌজা নিলামে খরিদ করেন। তিনি এই স্থানটিকে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রধান স্থানরূপে বিশেষ সহায়ক মনে করেন। এমন সময় তাঁর নামে নামকরণকৃত সিরাজগঞ্জ স্থানটি পুনঃ নদীভাঙ্গণে বিলীণ হয়। তিনি ভুতের দিয়ার মৌজাকেই নতুনভাবে ‘সিরাজগঞ্জ’ নামে নামকরণ করেন। ফলে ভুতের দিয়ার মৌজাই ‘সিরাজগঞ্জ’ নামে স্থায়ী রূপ লাভ করে।
রংপুর বিভাগঃ-
বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসনিক পূণর্বিন্যাসসংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি (National Implementation Committee for Administrative Reform:NICAR) ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ জানুয়ারি তারিখে রংপুরকে দেশের সপ্তম বিভাগ হিসেবে অনুমোদন দেয়। এর আগে ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ জুলাই তারিখে মন্ত্রীসভার বৈঠকে রংপুরকে বিভাগ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে একটি কমিটি তৈরি করা হয় এবং কমিটি ২১ জুলাই তারিখে প্রতিবেদন জমা দেয়।
১. দিনাজপুর জেলাঃ-
জনশ্রুতি আছে জনৈক দিনাজ অথবা দিনারাজ দিনাজপুর রাজপরিবারের প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর নামানুসারেই রাজবাড়ীতে অবস্থিত মৌজার নাম হয় দিনাজপুর। পরবর্তীতে ব্রিটিশ শাসকরা ঘোড়াঘাট সরকার বাতিল করে নতুন জেলা গঠন করে এবং রাজার সম্মানে জেলার নামকরণ করে দিনাজপুর।
২. গাইবান্ধা জেলাঃ-
গাইবান্ধা নামকরণ সম্পর্কে কিংবদন্তী প্রচলিত আছ, প্রায় পাচ হাজার বছর আগে মৎস্য দেশের রাজা বিরাটের রাজধানী ছিল গাইবান্ধার গোবিন্দগজ থানা এলাকায়। বিরাট রাজার গো-ধনের কোন তুলনা ছিল না। তার গাভীর সংখ্যা ছিল ষাট হাজার। মাঝে মাঝে ডাকাতরা এসে বিরাট রাজার গাভী লুণ্ঠন করে নিয়ে যেতো। সে জন্য বিরাট রাজা একটি বিশাল পতিত প্রান্তরে গো-শালা স্থাপন করেন। গো-শালাটি সুরক্ষিত এবং গাভীর খাদ্য ও পানির সংস্থান নিশ্চিত করতে। নদী তীরবর্তী ঘেসো জমিতে স্থাপন করা হয়। সেই নির্দিষ্ট স্থানে গাভীগুলোকে বেঁধে রাখা হতো। প্রচলিত কিংবদন্তী অনুসারে এই গাভী বেঁধে রাখার স্থান থেকে এতদঞ্চলের কথ্য ভাষা অনুসারে এলাকার নাম হয়েছে গাইবাঁধা এবং কালক্রমে তা গাইবান্ধা নামে পরিচিতি লাভ করে।
৩. কুড়িগ্রাম জেলাঃ-
কুড়িগ্রাম জনপদ বেশ প্রাচীন। কুড়িগ্রাম-এর নাম করণের সঠিক ইতিহাস জানা যায়নি। অনেকে মনে করেন গণনা সংখ্যা কুড়ি থেকে কুড়িগ্রাম হয়েছে। কারো মতে কুড়িটি কলু পরিবার এর আদি বাসিন্দা ছিল। তাই এর নাম কুড়িগ্রাম। কেউ বা মনে করেন, রংগপুর রাজার অবকাশ যাপনের স্থান ছিল কুড়িগ্রাম। প্রচুর বন-জঙ্গল ও ফল মূলে পরিপূর্ণ ছিল এই এলাকা, তাই ফুলের কুড়ি থেকে এর নাম হয়েছে কুড়িগ্রাম। ১৮০৯ সালে ডাঃ বুকালন হ্যামিলটন তাঁর বিবরণীতে বলেছেন-Kuriganj of which the market place is called Balabari in a place of considerable trade (martins Eastern India)। মিঃ ভাস তাঁর রংপুরের বিবরণীতেও এ অঞ্চলকে কুড়িগঞ্জ বলে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু কুড়িগঞ্জ নামের উৎপত্তি সম্বন্ধে কেউ কিছুই বলেননি। ১৯৮৪ সালের ২৩ শে জানুয়ারী ‘‘কুড়িগ্রাম’’ মহকুমা থেকে জেলায় উন্নীত হয়।
৪. লালমনিরহাট জেলাঃ-
লালমনিরহাট নামকরণ নিয়ে জনশ্রুতি আছে যে, বৃটিশ সরকারের আমলে বর্তমান লালমনিরহাট শহরের মধ্যে দিয়ে রেলপথ বসানোর সময় উল্লিখিত অঞ্চলের রেল শ্রমিকরা বন-জঙ্গল কাটতে গিয়ে জনৈক ব্যক্তি ’লালমনি’ পেয়েছিলেন। সেই লালমনি থেকেই পর্যায়ক্রমে লালমনিরহাট নামের উৎপত্তি হয়েছে। অন্য এক সূত্র থেকে জানা যায়, বিপ্লবী কৃষক নেতা নুরুলদীনের ঘনিষ্ঠ সাথী লালমনি নামে এক ধনাঢ্য মহিলা ছিলেন। যার নামানুসারে লালমনিরহাট নামকরণ করা হয়েছে।
৫. নীলফামারী জেলাঃ-
প্রায় দুই শতাধিক বছর পূর্বে এ অঞ্চলে নীল চাষের খামার স্থাপন করে ইংরেজ নীলকরেরা। এ অঞ্চলের উর্বর ভূমি নীল চাষের অনুকূল হওয়ায় দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় নীলফামারীতে বেশি সংখ্যায় নীলকুঠি ও নীল খামার গড়ে ওঠে। ঊণবিংশ শতাব্দীর শুরুতেই দুরাকুটি, ডিমলা, কিশোরগঞ্জ, টেঙ্গনমারী প্রভৃতি স্থানে নীলকুঠি স্থাপিত হয়। সে সময় বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের মধ্যে নীলফামারীতেই বেশি পরিমাণে শস্য উৎপাদিত মাটির ঊর্বরতার কারণে। সে কারণেই নীলকরদের ব্যাপক আগমন ঘটে এতদঅঞ্চলে। গড়ে ওঠে অসংখ্য নীল খামার। বর্তমান নীলফামারী শহরের তিন কিলোমিটার উত্তরে পুরাতন রেল স্টেশনের কাছেই ছিল একটি বড় নীলকুঠি। তাছাড়া বর্তমানে অফিসার্স ক্লাব হিসেবে ব্যবহৃত পুরাতন বাড়িটি ছিল একটি নীলকুঠি। ধারণা করা হয়, স্থানীয় কৃষকদের মুখে ‘নীল খামার’ রূপান্তরিত হয় ‘নীল খামারী’তে। আর এই নীলখামারীর অপভ্রংশ হিসেবে উদ্ভব হয় নীলফামারী নামের।
৬. পঞ্চগড় জেলাঃ-
“পঞ্চ” (পাঁচ) গড়ের সমাহার “পঞ্চগড়” নামটির অপভ্রমংশ “পঁচাগড়” দীর্ঘকাল এই জনপদে প্রচলিত ছিল। কিন্তু গোড়াতে এই অঞ্চলের নাম যে, ‘পঞ্চগড়ই’ ছিলো সে ব্যাপারে সন্দেহর কোন অবকাশ নেই। বস্তুত ভারতীয় উপমহাদেশে “পঞ্চ” শব্দটি বিভিন্ন স্থান নামের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। যেমন- পঞ্চনদ, পঞ্চবটী, পঞ্চনগরী, পঞ্চগৌড় ইত্যাদি। “পঞ্চনগরীর” দূরত্ব পঞ্চগড় অঞ্চল থেকে বেশি দূরে নয়। পঞ্চগড় জেলায় বেশ কিছু গড় রয়েছে তাদের মাঝে উল্লেখ করার মত গড় হল ভিতরগড়, মিরগড়, রাজনগড়, হোসেনগড়, দেবনগড়। ‘পঞ্চ’ অর্থ পাঁচ, আর ‘গড়’ অর্থ বন বা জঙ্গল। ‘পঞ্চগড়’ নামটি এভাবেই এসেছে।
৭. রংপুর জেলাঃ-
রংপুর নামকরণের ক্ষেত্রে লোকমুখে প্রচলিত আছে যে পূর্বের ‘রঙ্গপুর’ থেকেই কালক্রমে এই নামটি এসেছে। ইতিহাস থেকে জানা যায় যে উপমহাদেশে ইংরেজরা নীলের চাষ শুরু করে। এই অঞ্চলে মাটি উর্বর হবার কারণে এখানে প্রচুর নীলের চাষ হত। সেই নীলকে স্থানীয় লোকজন রঙ্গ নামেই জানত। কালের বিবর্তনে সেই রঙ্গ থেকে রঙ্গপুর এবং তা থেকেই আজকের রংপুর। অপর একটি প্রচলিত ধারনা থেকে জানা যায় যে রংপুর জেলার পূর্বনাম রঙ্গপুর। প্রাগ জ্যোতিস্বর নরের পুত্র ভগদত্তের রঙ্গমহল এর নামকরন থেকে এই রঙ্গপুর নামটি আসে। রংপুর জেলার অপর নাম জঙ্গপুর । ম্যালেরিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব থাকায় কেউ কেউ এই জেলাকে যমপুর বলেও ডাকত। তবে রংপুর জেলা সুদুর অতীত থেকে আন্দোলন প্রতিরোধের মূল ঘাঁটি ছিল। তাই জঙ্গপুর নামকেই রংপুরের আদি নাম হিসেবে ধরা হয়। জঙ্গ অর্থ যুদ্ধ, পুর অর্থ নগর বা শহর। গ্রাম থেকে আগত মানুষ প্রায়ই ইংরেজদের অত্যাচারে নিহত হত বা ম্যালেরিয়ায় মারা যেত। তাই সাধারণ মানুষ শহরে আসতে ভয় পেত। সুদুর অতীতে রংপুর জেলা যে রণভূমি ছিল তা সন্দেহাতীত ভাবেই বলা যায়। ত্রিশের দশকের শেষ ভাগে এ জেলায় কৃষক আন্দোলন যে ভাবে বিকাশ লাভ করে ছিল তার কারণে রংপুরকে লাল রংপুর হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছিল।
৮. ঠাকুরগাঁও জেলাঃ- ঠাকুরগাঁও এর আদি নাম ছিল নিশ্চিন্তপুর। ঠাকুরগাঁওয়ের নামকরণের ইতিহাস সম্পর্কে আর যা পাওয়া গেছে তাহলো, বর্তমানে যেটি জেলা সদর অর্থাৎ যেখানে জেলার অফিস-আদালত অবস্থিত সেখান থেকে ৮ কিলোমিটার উত্তরে আকচা ইউনিয়নের একটি মৌজায় নারায়ণ চক্রবর্তী ও সতীশ চক্রবর্তী নামে দুই ভাই বসবাস করতেন। সম্পদ ও প্রভাব প্রতিপত্তির কারণে তারা সেই এলাকায় খুব পরিচিত ছিলেন। সেখানকার লোকজন সেই চক্রবর্তী বাড়িকে ঠাকুরবাড়ি বলতেন। পরে স্থানীয় লোকজন এই জায়গাকে ঠাকুরবাড়ি থেকে ঠাকুরগাঁও বলতে শুরু করে। ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১ ফেব্রুয়ারী ৫টি থানা নিয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
সিলেট বিভাগঃ-
১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দের ১ আগষ্ট সিলেট দেশের ষষ্ঠ বিভাগ হিসাবে মর্যাদা পায়।
১. হবিগঞ্জ জেলাঃ-
সুফি-সাধক হযরত শাহজালাল (রঃ) এর অনুসারী হযরত সৈয়দ নাসির উদ্দীন (রঃ) এর পূর্ণস্মৃতি বিজড়ি খোয়াই, কারাঙ্গী, বিজনা, রত্না প্রভৃতি নদী বিধৌত হবিগঞ্জ একটি ঐতিহাসিক প্রাচীন জনপদ। ঐতিহাসিক সুলতানসী হাবেলীর প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ সুলতানের অধঃস্তন পুরুষ সৈয়দ হেদায়েত উল্লাহর পুত্র সৈয়দ হাবীব উল্লাহ খোয়াই নদীর তীরে একটি গঞ্জ প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর নামানুসরে হবিগঞ্জ নামকরণ করা হয়। ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১ মার্চ হবিগঞ্জ জেলায় উন্নীত হয়।
২. মেীলভীবাজার জেলাঃ-
হয়রত শাহ মোস্তফা (র:) এর বংশধর মৌলভী সৈয়দ কুদরতউল্লাহ অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি মনু নদীর উত্তর তীরে কয়েকটি দোকানঘর স্থাপন করে ভোজ্যসামগ্রী ক্রয় বিক্রয়ের সুযোগ সৃষ্টি করেন। মৌলভী সৈয়দ কুদরতউল্লাহ প্রতিষ্ঠিত এ বাজারে নৌ ও স্থলপথে প্রতিদিন লোকসমাগম বৃদ্ধি পেতে থাকে। ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগমের মাধ্যমে মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে মৌলভীবাজারের খ্যাতি। মৌলভী সাহেবের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বরুপ এই অঞ্চলের নাম হয় মৌলভীবাজার। ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের ২২শে ফেব্রুয়ারী মৌলভীবাজার মহকুমাটি জেলায় উন্নীত হয়।
৩. সুনামগঞ্জ জেলাঃ-
‘সুনামদি’ নামক জনৈক মোগল সিপাহীর নামানুসারে সুনামগঞ্জের নামকরণ করা হয়েছিল বলে জানা যায়। ‘সুনামদি’ (সুনাম উদ্দিনের আঞ্চলিক রূপ) নামক উক্ত মোগল সৈন্যের কোন এক যুদ্ধে বীরোচিত কৃতিত্বের জন্য সম্রাট কর্তৃক সুনামদিকে এখানে কিছু ভূমি পুরস্কার হিসাবে দান করা হয়। তাঁর দানস্বরূপ প্রাপ্ত ভূমিতে তাঁরই নামে সুনামগঞ্জ বাজারটি স্থাপিত হয়েছিল। এভাবে সুনামগঞ্জ নামের ও স্থানের উৎপত্তি হয়েছিল বলে মনে করা হয়ে থাকে।
৪. সিলেট জেলাঃ-
প্রাচীন গ্রন্থাদিতে এ অঞ্চলকে বিভিন্ন নামের উল্লেখ্য আছে। হিন্দুশাস্ত্র অনুসারে শিবের স্ত্রী সতি দেবীর কাটা হস্ত (হাত) এই অঞ্চলে পড়েছিল, যার ফলে ‘শ্রী হস্ত’ হতে শ্রীহট্ট নামের উৎপত্তি বলে হিন্দু সম্প্রদায় বিশ্বাস করেন। খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকের ঐতিহাসিক এরিয়ান লিখিত বিবরণীতে এই অঞ্চলের নাম “সিরিওট” বলে উল্লেখ আছে। এছাড়া, খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতকে এলিয়েনের (Ailien) বিবরণে “সিরটে”, এবং পেরিপ্লাস অব দ্যা এরিথ্রিয়ান সী নামক গ্রন্থে এ অঞ্চলের নাম “সিরটে” এবং “সিসটে” এই দুইভাবে লিখিত হয়েছে। অতঃপর ৬৪০ খ্রিস্টাব্দে যখন চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং এই অঞ্চল ভ্রমণ করেন। তিনি তাঁর ভ্রমণ কাহিনীতে এ অঞ্চলের নাম “শিলিচতল” উল্লেখ করেছেন তুর্কি সেনাপতি ইখতিয়ার উদ্দীন মুহম্মদ বখতিয়ার খলজী দ্বারা বঙ্গবিজয়ের মধ্য দিয়ে এদেশে মুসলিম সমাজব্যবস্থার সূত্রপাত ঘটলে মুসলিম শাসকগণ তাঁদের দলিলপত্রে “শ্রীহট্ট” নামের পরিবর্তে “সিলাহেট”, “সিলহেট” ইত্যাদি নাম লিখেছেন বলে ইতিহাসে প্রমাণ মিলে। আর এভাবেই শ্রীহট্ট থেকে রূপান্তর হতে হতে একসময় সিলেট নামটি প্রসিদ্ধ হয়ে উঠেছে বলে ঐতিহাসিকরা ধারণা করেন। এছাড়াও বলা হয়, এক সময় সিলেট জেলায় এক ধনী ব্যক্তির একটি কন্যা ছিল। তার নাম ছিল শিলা। ব্যক্তিটি তার কন্যার স্মৃতি রক্ষার্থে একটি হাট নির্মাণ করেন এবং এর নামকরণ করেন শিলার হাট। এই শিলার হাট নামটি নানাভাবে বিকৃত হয়ে সিলেট নামের উৎপত্তি হয়।
তথ্য সূত্রঃ-জেলা তথ্য বাতায়ন,বাংলা পিডিয়া, উইকিপিডিয়া, যশোর ইনফো, নেত্রকোণার আলো এবং বিভিন্ন সূত্র হতে প্রাপ্ত।
কি ভাবে সারিয়ে তুলবেন ব্রণের ক্ষত?
ব্রণ ত্বকের একটি পরিচিত সমস্যা। পরিছি ছেলে মেয়ে উভয়ের একটি বয়স সীমা পয়ার হবার পরে মুখে ছোট ছোট ব্রণ উঠে। আর এই সমস্যাটির সাথে যুদ্ধ করেন নি এমন মানুষ কমই আছে। ব্রন যেকোন বয়সের মানুষের ত্বকেই দেখা দিয়ে থাকে বিশেষ করে টিনএজারদের ত্বকে ব্রণের সমস্যা সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে।
এরপর হয়তো একটি সময় ব্রন সমস্যা রোধ হয় কিন্তু পুরোপুরি রোধ হয় না। তৈলাক্ত ত্বকেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্রন হতে দেখা যায়।ব্রন স্বাভাবিক ভাবেই ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট করে থাকে কিন্তু সবচেয়ে বেশি খারাপ তখনই লাগে যখন ব্রণের ক্ষত দাগ আমদের ত্বকে রিয়ে যায় যাকে মূলত একনে স্কার বলা হয়।
ব্রন হাত দিয়ে খুঁটলে এমন দাগ দেখা দেয় ত্বকে। আর এই ক্ষত দাগগুলোকে ত্বক হতে খুব সহজে রোধ করা যায় না। কিছু প্রাকৃতিক উপায়ে এই দাগগুলো সারিয়ে তোলা যায় কিন্তু এটি অনেক সময়ের ব্যাপার। তাই চলুন জেনে নিই ব্রণের ক্ষত দাগ সারাতে কী করবেন।
আলুর রস
নানা ধরণের পুষ্টি ও মিনারেলে ভরপুর সবজি হল আলু। আর এই আলু আমাদের দেহ ও ত্বক উভয়ের জন্যই ভালো। ত্বক থেকে ব্রণের ক্ষত দাগ সারাতে আলুর জুস ব্যবহার করুন। একটি আলু নিয়ে কেটে স্লাইস করে নিন তারপর সরাসরি ত্বকের ক্ষত দাগের ওপর দিয়ে রাখুন।
এছাড়াও আলু কেটে ব্লেন্ড করে তা থেকে রস নিয়ে ত্বকে ম্যাসেজ করতে পারেন এবং আরও ভালো ফল পেতে আলুর রস ত্বকে দিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন একবার এইভাবে ত্বকে আলুর রস ব্যবহার করুন।
চিনি দিয়ে স্ক্রাব
যাঁদের ত্বকে ব্রনের অনেক ক্ষত দাগ রয়েছে তারা চিনি ব্যবহার করতে পারেন দাগ রোধ করতে। কারণ চিনিতে আছে গ্লাইকলিক এসিড( glycolic acid) ও AHA উপাদান যা ত্বকের মৃত কোষ রোধ করে এবং নতুন কোষ তৈরিতে সাহায্য করে। পরিমাণ মতো চিনি নিয়ে তাতে সামান্য অলিভ ওয়েল ও লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন।
তারপর ত্বকে ম্যাসেজ করুন। ১০/১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। ভালো ফলাফল পেতে সপ্তাহে ২/৩ বার ত্বকে চিনির এই পেস্ট ব্যবহার করুন। কিন্তু ত্বক পরিষ্কার করে ফেলার পর ময়শ্চার লাগাতে ভুলবেন না।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল
ত্বকে ব্রণের ক্ষত রোধ করতে সবচেয়ে সহজ উপায় হল ভিটামিন ই। ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্রণের ক্ষত দাগা সারাতে খুব ভালো কাজ করে। প্রতিদিন ময়শ্চারাইযার হিসেবে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ত্বকে ব্যবহার করুন। ভিটামিন ই ক্যাপসুল ত্বকের ক্ষত দাগ তো রোধ করেই সাথে ব্রণও রোধ করে।
আসুন জেনে নেই মোটর সাইকেলের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া !
তরুণদের মোটরসাইকেলের প্রতি বেজায় প্রীতি। শুধু তরুণরাই নয়, কর্মজীবী, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে নানান পেশার মানুষ মোটরসাইকেল চালান। কিন্তু অনেকেরই মোটর সাইকেলের রেজিস্ট্রেশন নেই। সম্প্রতি পুলিশের আইজিপি ঘোষণা দিয়েছেন, ৩ জুন থেকে রেজিস্ট্রেশন বিহীন মোটর সাইকেল আটক করতে অভিযান চালানো হবে। তাই যাদের মোটর সাইকেলের রেজিস্ট্রেশন নেই তারা বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটি(বিআরটিএ) থেকে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে নিতে পারেন।
আসুন জেনে নেই মোটর সাইকেলের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া।
বাংলাদেশের সড়কে ৫০ সিসি থেকে ১৫০ সিসি‘র মোটর সাইকেল চলাচলের অনুমতি আছে। বিআরটিএর তথ্য মতে ৫০ এবং ৮০ সিসির মোটর সাইকেলের রেজিস্ট্রেশন ফি ১৫ হাজার ৬১৩ টাকা। ১০০ সিসির মোটর সাইকেলের রেজিস্ট্রেশন ফি ২১ হাজার ৩৬৩ টাকা। এবং ১৫০ সিসির মোটর সাইকেলের রেজিস্ট্রেশন ফি ২৩ হাজার ৬৬৩টাকা।
রেজিস্টেশনের জন্য সংশ্লিষ্ট বিআরটিএ অফিসে এসে নির্ধারিত ফরমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ মোটরযানের রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করবেন। রেজিস্ট্রেশন ফর্ম বিআরটিএ ওয়েবসাইটেও পাওয়া যায়। এখান থেকে(www.brta.gov.bd) ফর্ম ডাউনলোড করে নেয়া যাবে।
অতঃপর বিআরটিএ অফিস কর্তৃক আবেদনকারীর আবেদন ফর্ম ও সংযুক্ত দালিলাদি যাচাই-বাছাই করে সঠিক পাওয়া গেলে গ্রাহককে প্রয়োজনীয় রেজিস্ট্রেশন ফি জমা প্রদান করতে একটি এ্যাসেসমেন্ট স্লিপ প্রদান করা হবে। ফি জমা প্রদানের পর গাড়িটি পরিদর্শনেরর জন্য বিআরটিএ অফিসে হাজির করতে হবে।
গাড়িটি পরিদর্শন করার পর মালিকানা ও গাড়ি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য বিআরটিএ ইনফরমেশন সিস্টেমে এন্টি করার পর সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি:) কর্তৃক রেজিস্টেশনের অনুমোদন প্রদান করা হয় এবং রেজিস্ট্রেশন রেজিস্ট্রেশন নম্বর উল্লেখপূর্বক একটি প্রাপ্তিস্বীকার পত্র, ফিটনেস সার্টিফিকেট ও ট্যাক্স টোকেন প্রিন্ট করে সংশ্লিস্ট কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর সম্বলিত গ্রাহককে প্রদান করা হয়।
ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট (ডিআরসি) তৈরির জন্য গ্রাহকের বায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর ও আঙ্গুলের ছাপ) প্রদানের জন্য গ্রাহককে সংশ্লিষ্ট অফিসে উপস্থিত হতে হবে। এজন্য গ্রাহককে তার মোবাইল ফোনে এসএমএস এর মাধ্যমে অবগত করা হয়। বায়োমেট্রিক্স প্রদানের পর ডিআরসি গ্রহণের জন্যও গ্রাহককে এসএমএস এর মাধ্যমে অবগত করা হয়।
মোটর সাইকেল এবং অন্যান্য গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের জন্য কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করা হয়। এগুলো হলো:
১ । মালিক ও আমদানিকারক/ডিলার কর্তৃক যথাযথভাবে পূরণ ও স্বাক্ষর করা নির্ধারিত আবেদনপত্র। আবেদন ফরম এ ওয়েবসাইটের DOWNLOAD FORMS থেকে বা বিআরটিএ অফিস হতে সংগ্রহ করা যাবে।
একাধিক ব্যক্তি যৌথভাবে কোনো গাড়ির মালিক হলে সেক্ষেত্রে একজনের নামে রেজিস্ট্রেশনের জন্য সকলের সম্মতি সম্বলিত হলফনামা এবং প্রতিষ্ঠান/কোম্পানির ক্ষেত্রে স্বাক্ষর ও সিলমোহর, ব্যাংক অথবা অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গাড়ির মালিকানার আর্থিক সংশ্লিষ্টতা থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্যাডে রেজিস্ট্রেশন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করতে হবে।
২ । বিল অব এন্ট্রি, ইনভয়েস, বিল অব লেডিং ও এলসিএ কপি।
৩ । সেল সার্টিফিকেট /সেল ইন্টিমেশন/বিক্রয় প্রমাণপত্র (আমদানিকারক/বিক্রেতা প্রদত্ত)
৪ । প্যাকিং লিস্ট, ডেলিভারি চালান ও গেইট পাশ (সিকেডি গাড়ির ক্ষেত্রে)
৫ । টিন সার্টিফিকেট এবং অগ্রিম/অনুমিত আয়কর প্রদানের প্রমাণপত্র
৬ । বিদেশি নাগরিকের নামে রেজিস্ট্রেশন/মালিকানা বদলি হলে বাংলাদেশের ওয়ার্ক পারমিট এবং ভিসার মেয়াদের কপি।
৭ । (ক) মূসক-১ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), (খ) মূসক-১১(ক)/ভ্যাট (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), (গ) ভ্যাট পরিশোধের চালান (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে )
৮ । প্রস্তুতকারক/বিআরটিএ কর্তৃক অনুমোদিত বডি ও আসন ব্যবস্থার স্পেসিফিকেশন সম্বলিত ড্রইং (বাস, ট্রাক, হিউম্যান হলার, ডেলিভারী ভ্যান, অটো টেম্পু ইত্যাদি মোটরযানের ক্ষেত্রে)।
৯ । সিকেডি মোটরযানের ক্ষেত্রে বিআরটিএ’র টাইপ অনুমোদন ও অনুমোদিত সংযোজনী তালিকা।
১০। বডি ভ্যাট চালান ও ভ্যাট পরিশোধের রসিদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।
১১। প্রযোজ্য রেজিস্ট্রেশন ফি জমাদানের রসিদ।
১২। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ছাড়পত্র (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।
১৩। ব্যক্তি মালিকানাধীন আবেদনকারীর ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র/পাসপোর্ট/টেলিফোন বিল/বিদ্যুৎ বিল ইত্যাদির যেকোনটির সত্যায়িত ফটোকপি এবং মালিক প্রতিষ্ঠান হলে প্রতিষ্ঠানের প্যাডে চিঠি।
১৪। নিলামে ক্রয়কৃত প্রতিরক্ষা বিভাগের গাড়ির ক্ষেত্রে লগবুকে বর্ণিত প্রস্তুতকাল ও প্রস্তুতকারকের বিস্তারিত বিবরণ সম্বলিত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদত্ত ছাড়পত্র।
১৫। নিলামে ক্রয়কৃত সরকারি/আধাসরকারি/স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের গাড়ির ক্ষেত্রে নিলাম সংক্রান্ত কাগজপত্র এবং মেরামতের বিস্তারিত বিবরণ।
১৬।রিকন্ডিশন্ড মোটরযান রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত অতিরিক্ত কাগজপত্র প্রয়োজন হবে-
ক) ‘টিও’ ফরম (ক্রেতা কর্তৃক স্বাক্ষরিত), ‘টিটিও’ ফরম ও বিক্রয় রসিদ (আমদানিকারক কর্তৃক স্বাক্ষরিত)।
খ) ডি-রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটের মূল কপি এবং ডি-রেজিস্ট্রেশনের ইংরেজি অনুবাদের সত্যায়িত কপি (সার্টিফিকেট অব ক্যানসেলেশন এর সত্যায়িত কপি)
গ) এক কপিতে একাধিক গাড়ির বর্ণনা থাকলে মূলকপি প্রদর্শনপূর্বক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ/বিভাগ কর্তৃক সত্যায়িত কপি দাখিল করা যাবে।
১৭। মোটরযান পরিদর্শক কর্তৃক গাড়িটির পরিদর্শন প্রতিবেদন।মটর সাইকেল সংক্রান্ত সকল কাগজ পত্র যে কোম্পানি থেকে মটর সাইকেল টি ক্রয় করেছেন সেই কোম্পানি থেকে সংগ্রহ করুন।
কালোজিরার নানান গুন
মসলাপাতি রান্নায় যেমন অপরিহার্য, তেমনি ভেষজে অনন্য। বিভিন্ন মসলার ভেষজ গুণ বিভিন্ন। এগুলো জেনে ব্যবহার করলে অনেক প্রকার রোগের হাত থেকে সহজে রক্ষা পাওয়া যায়। তেমনি কালোজিরা; বরং এটি মসলা কেন, সব ভেষজের সেরা। ইসলামি মতে, কালোজিরায় মৃত্যু ছাড়া সব রোগের উপশম রয়েছে। তাই কালোজিরাকে মসলার সাথে সাথে ভেষজ হিসেবে ব্যবহার করে অল্প পয়সায় অনেক বেশি উপকার লাভ করা যায়।
কালোজিরা গুণে তিক্তরসধারী, উগ্র সুগন্ধযুক্ত, ক্ষুধা বৃদ্ধিকারক, পেটের বায়ুনাশক ও মূত্রকারক। এটি উদরি বা ফুসফুসজনিত রোগে উপকারী। এ ছাড়া কৃমির উপদ্রব নিবারণের জন্যও এটি ব্যবহৃত হয়। কেউ কেউ কাশি ও জন্ডিসে এটি সেবনের কথা বলেন। ইউনানি মতে, এটি বিরেচক ও অর্শ্বে হিতকর। তা ছাড়া প্রসূতীর দুধ বাড়ায় এটির ব্যবহার রয়েছে। এর ব্যবহারবিধি নিচে দেয়া হলো :
১.স্তন্যস্বল্পতা : পেটে আমদোষ থাকলে অথবা শরীরের রসধাতু শুকাতে থাকলে স্তন্য কমে যায়। এ সময় কালোজিরা সামান্য ভেজে গুঁড়ো করে ৫০০ মিলিগ্রাম হারে ৭-৮ চা চামচ দুধে মিশিয়ে ওই মাত্রায় সকালে ও বিকেলে সাত দিন ধরে খেলে উল্লেখযোগ্য ফল পাওয়া যায়।
২.মাসিক ঋতু : যেসব মহিলা অনিয়মিত অথবা স্বল্প অথবা অধিক স্রাবের জন্য কষ্ট পেয়ে থাকেন, তাদের ঋতু হওয়ার পাঁচ-সাত দিন আগে থেকে ৫০০ মিলিগ্রাম হারে সামান্য গরম এমন পানিসহ সকালে ও বিকেলে খেতে হয়। তার পরও অসুবিধা থেকে গেলে পরপর ২-৩ মাস ওভাবে খেতে হবে।
৩.বাধক দোষ : এ দোষ হলে মেয়েরা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে, কেউবা আত্মসুখে তৎপর থাকে, কেউবা শূচীবায়ুগ্রস্ত হয়, কারো কারো দেহটা স্থূল হয়ে যায় আবার কখনো বা তা হয় না। আবার সবাই যে শুকিয়ে যাবে, তাও নয়। কিন্তু মনের ওপর এ রোগের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এর ফলে কেউ কেউ কামজ উন্মাদ রোগেও আক্রান্ত হয়। আবার এ দোষে কোনো কোনো মহিলা জননগ্রন্থির ক্রিয়াশক্তি হারিয়ে ফেলে। সেই সাথে আরো অনেক উপসর্গ এসে জোটে। এ ক্ষেত্রে কালোজিরা সামান্য ভেজে নিয়ে গুঁড়ো করে সকালে ও সন্ধ্যায় ৭৫০ মিলিগ্রাম মাত্রায় খেতে হয় এবং তা মাসিকেও খেতে হবে। এভাবে ২-৩ মাস খেলে রোগের উপশম হবে।
৪.গর্ভাশয়ের দ্বার সঙ্কোচন : প্রসবের পর কালোজিরার ক্বাথ খেলে গর্ভাশয়ের দ্বার সঙ্কুচিত হয় এবং সেই সাথে স্তন্য বাড়ে।
৫.কক্টরজ ও ঋতুরোধ : অল্প মাত্রায় কালোজিরা মেয়েদের ঋতুস্রাব বাড়ায়, কষ্টরজ ও ঋতুরোধ অসুখ সারায়। তবে বেশি মাত্রায় খেলে গর্ভস্রাব হয়।
৬.মাথায় যন্ত্রণা : কাঁচা সর্দি হয়ে মাথায় যন্ত্রণা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কালোজিরা পুঁটলিতে বেঁধে শুঁকতে হবে। তবে পুঁটলিতে নেয়ার আগে তা রগড়ে নিতে হবে। তাতে গন্ধ বের হয় এবং উপকার হয়। তা ছাড়া সির্কাতে ভিজিয়ে শুঁকলেও মাথাব্যথা সারে।
৭.মাথায় সর্দি বসা (শ্লেষ্মা বসে যাওয়া) : এ অবস্থায় কালোজিরা বেটে কপালে প্রলেপ দিলে ও মিহি গুঁড়োর নস্যি নিলে উপকার হয়।
৮.নতুন সর্দি : এ অবস্থায় কালোজিরার নস্যি নিলে উপকার মেলে।
৯.চুলকানি : কালোজিরা ভাজা তেল গায়ে মাখলে চুলকানিতে উপকার হয়। এতে ১০০ গ্রাম সরষের তেলে ২৫-৩০ গ্রাম কালোজিরা ভেজে সে তেল ছেঁকে নিয়ে ব্যবহার করতে হয়।
১০.বিছের হুলের জ্বালা : কালোজিরা বেটে তা লাগিয়ে দিলে অল্প সময় পরই হুলের জ্বালা কমে যায়।
১১.গলা ফোলা : সর্দি-কাসির দোষে গ্লান্ড ফুলেছে, সে ক্ষেত্রে কালোজিরা, চাল পোড়া, মুসাববর সমান পরিমাণে নিয়ে বেটে প্রলেপ দিলে এক দিনের মধ্যে ফোলা ও ব্যথা উভয়ই উপশম হয়।
১২.শোথ : পানিতে কালোজিরা বেটে প্রলেপ দিলে হাত-পা ফোলাসহ সব শোথ কমে।
১৩.দাঁতের ব্যথা : গরম পানিতে কালোজিরা নিয়ে তা দিয়ে কুলি করলে দাঁতের ব্যথার উপশম হয়।
১৪.দাদ : কালোজিরা বেটে প্রলেপ দিলে এসবে উপকার হয়। তা ছাড়া ওপরে উল্লিখিত চুলকানির নিয়মে দিলে আরো ভালো হয়।
১৫.ধবল : কালোজিরা বেটে প্রলেপ দিলে এসবে উপকার হয়। তা ছাড়া ওপরে উল্লেখিত চুলকানির নিয়মে দিলে আরো ভালো হয়।
১৬.নতুন চুল গজানো : কালোজিরা বেটে নিয়ে মাথায় অনেক দিন ধরে মালিশ করলে নতুন চুল গজায়।
১৭.লাবণ্য : ঘিয়ের সাথে মিশিয়ে খেলে মুখ উজ্জ্বল হয় ও রং ফর্সা হয়।
১৮.সন্তান প্রসব : কালোজিরা পানিতে সিদ্ধ করে খেলে সন্তানের প্রসব তাড়াতাড়ি হয়।
১৯.কৃমি : ভিনেগারে ভিজিয়ে কালোজিরা খেলে কৃমি নষ্ট হয়।
২০.স্মৃতিভ্রংশ : স্মৃতিভ্রংশ ও স্মরণশক্তির দুর্বলতায় কালোজিরা খুব কার্যকর। ৩ গ্রাম কালোজিরা ২০ মিলিলিটার বিশুদ্ধ মধুসহ চাটলে এ রোগ সারে।
কালোজিরা গুণে তিক্তরসধারী, উগ্র সুগন্ধযুক্ত, ক্ষুধা বৃদ্ধিকারক, পেটের বায়ুনাশক ও মূত্রকারক। এটি উদরি বা ফুসফুসজনিত রোগে উপকারী। এ ছাড়া কৃমির উপদ্রব নিবারণের জন্যও এটি ব্যবহৃত হয়। কেউ কেউ কাশি ও জন্ডিসে এটি সেবনের কথা বলেন। ইউনানি মতে, এটি বিরেচক ও অর্শ্বে হিতকর। তা ছাড়া প্রসূতীর দুধ বাড়ায় এটির ব্যবহার রয়েছে। এর ব্যবহারবিধি নিচে দেয়া হলো :
১.স্তন্যস্বল্পতা : পেটে আমদোষ থাকলে অথবা শরীরের রসধাতু শুকাতে থাকলে স্তন্য কমে যায়। এ সময় কালোজিরা সামান্য ভেজে গুঁড়ো করে ৫০০ মিলিগ্রাম হারে ৭-৮ চা চামচ দুধে মিশিয়ে ওই মাত্রায় সকালে ও বিকেলে সাত দিন ধরে খেলে উল্লেখযোগ্য ফল পাওয়া যায়।
২.মাসিক ঋতু : যেসব মহিলা অনিয়মিত অথবা স্বল্প অথবা অধিক স্রাবের জন্য কষ্ট পেয়ে থাকেন, তাদের ঋতু হওয়ার পাঁচ-সাত দিন আগে থেকে ৫০০ মিলিগ্রাম হারে সামান্য গরম এমন পানিসহ সকালে ও বিকেলে খেতে হয়। তার পরও অসুবিধা থেকে গেলে পরপর ২-৩ মাস ওভাবে খেতে হবে।
৩.বাধক দোষ : এ দোষ হলে মেয়েরা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে, কেউবা আত্মসুখে তৎপর থাকে, কেউবা শূচীবায়ুগ্রস্ত হয়, কারো কারো দেহটা স্থূল হয়ে যায় আবার কখনো বা তা হয় না। আবার সবাই যে শুকিয়ে যাবে, তাও নয়। কিন্তু মনের ওপর এ রোগের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এর ফলে কেউ কেউ কামজ উন্মাদ রোগেও আক্রান্ত হয়। আবার এ দোষে কোনো কোনো মহিলা জননগ্রন্থির ক্রিয়াশক্তি হারিয়ে ফেলে। সেই সাথে আরো অনেক উপসর্গ এসে জোটে। এ ক্ষেত্রে কালোজিরা সামান্য ভেজে নিয়ে গুঁড়ো করে সকালে ও সন্ধ্যায় ৭৫০ মিলিগ্রাম মাত্রায় খেতে হয় এবং তা মাসিকেও খেতে হবে। এভাবে ২-৩ মাস খেলে রোগের উপশম হবে।
৪.গর্ভাশয়ের দ্বার সঙ্কোচন : প্রসবের পর কালোজিরার ক্বাথ খেলে গর্ভাশয়ের দ্বার সঙ্কুচিত হয় এবং সেই সাথে স্তন্য বাড়ে।
৫.কক্টরজ ও ঋতুরোধ : অল্প মাত্রায় কালোজিরা মেয়েদের ঋতুস্রাব বাড়ায়, কষ্টরজ ও ঋতুরোধ অসুখ সারায়। তবে বেশি মাত্রায় খেলে গর্ভস্রাব হয়।
৬.মাথায় যন্ত্রণা : কাঁচা সর্দি হয়ে মাথায় যন্ত্রণা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কালোজিরা পুঁটলিতে বেঁধে শুঁকতে হবে। তবে পুঁটলিতে নেয়ার আগে তা রগড়ে নিতে হবে। তাতে গন্ধ বের হয় এবং উপকার হয়। তা ছাড়া সির্কাতে ভিজিয়ে শুঁকলেও মাথাব্যথা সারে।
৭.মাথায় সর্দি বসা (শ্লেষ্মা বসে যাওয়া) : এ অবস্থায় কালোজিরা বেটে কপালে প্রলেপ দিলে ও মিহি গুঁড়োর নস্যি নিলে উপকার হয়।
৮.নতুন সর্দি : এ অবস্থায় কালোজিরার নস্যি নিলে উপকার মেলে।
৯.চুলকানি : কালোজিরা ভাজা তেল গায়ে মাখলে চুলকানিতে উপকার হয়। এতে ১০০ গ্রাম সরষের তেলে ২৫-৩০ গ্রাম কালোজিরা ভেজে সে তেল ছেঁকে নিয়ে ব্যবহার করতে হয়।
১০.বিছের হুলের জ্বালা : কালোজিরা বেটে তা লাগিয়ে দিলে অল্প সময় পরই হুলের জ্বালা কমে যায়।
১১.গলা ফোলা : সর্দি-কাসির দোষে গ্লান্ড ফুলেছে, সে ক্ষেত্রে কালোজিরা, চাল পোড়া, মুসাববর সমান পরিমাণে নিয়ে বেটে প্রলেপ দিলে এক দিনের মধ্যে ফোলা ও ব্যথা উভয়ই উপশম হয়।
১২.শোথ : পানিতে কালোজিরা বেটে প্রলেপ দিলে হাত-পা ফোলাসহ সব শোথ কমে।
১৩.দাঁতের ব্যথা : গরম পানিতে কালোজিরা নিয়ে তা দিয়ে কুলি করলে দাঁতের ব্যথার উপশম হয়।
১৪.দাদ : কালোজিরা বেটে প্রলেপ দিলে এসবে উপকার হয়। তা ছাড়া ওপরে উল্লিখিত চুলকানির নিয়মে দিলে আরো ভালো হয়।
১৫.ধবল : কালোজিরা বেটে প্রলেপ দিলে এসবে উপকার হয়। তা ছাড়া ওপরে উল্লেখিত চুলকানির নিয়মে দিলে আরো ভালো হয়।
১৬.নতুন চুল গজানো : কালোজিরা বেটে নিয়ে মাথায় অনেক দিন ধরে মালিশ করলে নতুন চুল গজায়।
১৭.লাবণ্য : ঘিয়ের সাথে মিশিয়ে খেলে মুখ উজ্জ্বল হয় ও রং ফর্সা হয়।
১৮.সন্তান প্রসব : কালোজিরা পানিতে সিদ্ধ করে খেলে সন্তানের প্রসব তাড়াতাড়ি হয়।
১৯.কৃমি : ভিনেগারে ভিজিয়ে কালোজিরা খেলে কৃমি নষ্ট হয়।
২০.স্মৃতিভ্রংশ : স্মৃতিভ্রংশ ও স্মরণশক্তির দুর্বলতায় কালোজিরা খুব কার্যকর। ৩ গ্রাম কালোজিরা ২০ মিলিলিটার বিশুদ্ধ মধুসহ চাটলে এ রোগ সারে।
২১.প্রস্রাবের বাধকতা : পরিমাণমতো কালোজিরা খেলে প্রস্রাব পরিষ্কার হয়ে যায়।
২২. শূল ব্যথা, বুকের ব্যথা, বমনেচ্ছা : কালোজিরা বেটে খেলে এসব রোগ সারে। সেই সাথে বাটা গায়েও মালিশ করতে হয়।
জন্ডিস, প্লীহাবৃদ্ধি, রোগেও ভাল উপকার পাওয়া যায়।
যে কারনে ধনেপাতা, এক কথায় বিপদজনক!
নিত্যদিনের বিভিন্ন খাবারে ধনেপাতা ব্যবহার করে থাকেন খাবারের গন্ধ এবং স্বাদে একটা পরিবর্তন আনার জন্য। ধনেপাতার বৈজ্ঞানিক নাম হল কোরিয়ানড্রাম স্যাটিভাম। কিন্তু কখনও কি কল্পনা করেছেন যে এই সুস্বাদু খাবারটির কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে?
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি কথা হল, এই সুপরিচিত সবুজ সবজিটির অনেক ঔষধি গুণাগুণের পাশাপাশি অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও বিদ্যমান। যা নিয়মিত খেলে আমাদের শরীর দিনদিন অসুস্থ হয়ে যেতে পারে।
লিভারের ক্ষতিসাধন
অতিরিক্ত ধনেপাতা খেলে এটি লিভারের কার্যক্ষমতাকে খারাপভাবে প্রভাবিত করে থাকে। এতে থাকা এক ধরনের উদ্ভিজ তেল শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আক্রান্ত করে ফেলে। এছাড়া এটাতে এক ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে যেটা সাধারণত লিভারের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে কিন্তু দেহের মাঝে এর অতিরিক্ত মাত্রার উপস্থিতি লিভারের ক্ষতিসাধন করে।
নিম্ন রক্তচাপ
অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়ার ফলে দেহের হৃৎপিন্ডের স্বাস্থ্য নষ্ট করে ফেলে, যার ফলে নিম্ন রক্তচাপ সৃষ্টি করে। বিশেষজ্ঞরা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এই ধনেপাতা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাই এটি অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে নিম্ন রক্তচাপের উদ্ভব ঘটতে পারে। এছাড়া এটি হালকা মাথাব্যথারও উদ্রেক করতে পারে।
পেট খারাপ
স্বাভাবিকভাবে ধনেপাতা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল বিষয়ক সমস্যা দূর করে থাকে কিন্তু বেশি পরিমাণে ধনেপাতা সেবন পাকস্থলীতে হজমক্রিয়ায় সমস্যা তৈরি করে থাকে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে এক সপ্তাহে ২০০ এমএল ধনেপাতা আহারে গ্যাসের ব্যথা ওঠা, পেটে ব্যথা, পেট ফুলে ওঠা, বমি হওয়া হওয়ারও সম্ভাবনা দেখা যায়।
ডায়রিয়া
ধনেপাতা অল্প খেলে পেটের সমস্যা দূর হয় কিন্তু এটি বেশি পরিমাণে খেলে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। এছাড়া এর ফলে ডিহাইড্রেশন হতে থাকে। ফলে ডায়রিয়ার সমস্যাটি হতেই থাকে। তাই এই ধরনের সমস্যা এড়াতে প্রতিদিনের খাবারে ধনেপাতা কম পরিমাণে ব্যবহার করুন।
নিঃশ্বাসের সমস্যা
আপনি যদি শ্বাসকষ্টের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে এই ধনেপাতা আহার থেকে বিরত থাকুন। কেননা এটি আপনার শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা করে থাকে যার ফলে ফুসফুসে অ্যাজমার সমস্যা হতে পারে। এই ধনেপাতা খেলে মাঝে মাঝে ছোট ছোট নিশ্বাস নিতেও সমস্যা তৈরি হয়।
বুকে ব্যথা
অতিরিক্ত ধনেপাতা আহারে বুকে ব্যথার মত জটিল সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এটা শুধুমাত্র অস্বস্তিকর ব্যথাই সৃষ্টি করে না তা দীর্ঘস্থায়ীও হয়ে থাকে। এজন্য এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে দৈনন্দিন আহারে কম করে এই ধনেপাতা খেতে পারেন।
ত্বকের সংবেদনশীলতা
সবুজ ধনেপাতাতে মোটামুটিভাবে কিছু ঔষধি অ্যাসিডিক উপাদান থাকে যেটি ত্বককে সূর্যরশ্মি থেকে বাঁচিয়ে সংবেদনশীল করে থাকে। কিন্তু অতিরিক্ত সেবনে সূর্যের রশ্মি একেবারেই ত্বকের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না ফলে ত্বক ভিটামিন কে থেকে বঞ্চিত হয়। এছাড়া ধনেপাতা ত্বকের ক্যান্সার প্রবণতাও তৈরি করে থাকে।
অ্যালার্জীর সমস্যা
ধনেপাতার প্রোটিন উপাদানটি শরীরে আইজিই নামক অ্যান্টিবডি তৈরি করে যা শরীরের বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানকে সমানভাবে বহন করে থাকে। কিন্তু এর অতিরিক্ত মাত্রা উপাদানগুলোর ভারসাম্য নষ্ট করে ফেলে। ফলে অ্যালার্জীর তৈরি হয়। এই অ্যালার্জীর ফলে দেহে চুলকানি, ফুলে যাওয়া, জ্বালাপোড়া করা, র্যা শ ওঠা এই ধরনের নানা সমস্যা হয়ে থাকে।
প্রদাহ
অতিরিক্ত ধনেপাতা সেবনের আরেকটি বিশেষ পার্শ্ব প্রতক্রিয়া হল মুখে প্রদাহ হওয়া। এই ঔষধিটির বিভিন্ন এসিডিক উপাদান যেটি আমাদের ত্বককে সংবেদনশীল করে থাকে পাশাপাশি এটি মুখে প্রদাহেরও সৃষ্টি করে। বিশেষ করে এর ফলে ঠোঁট, মাড়ি এবং গলা ব্যথা হয়ে থাকে। এর ফলে সারা মুখ লাল হয়েও যায়।
ভ্রূণের ক্ষতি
গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়া ভ্রূণের বা বাচ্চার শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকারক। ধনেপাতাতে থাকা কিছু উপাদান মহিলাদের প্রজনন গ্রন্থির কার্যক্ষমতাকে নষ্ট করে ফেলে যার ফলে মহিলাদের বাচ্চা ধারণ ক্ষমতা লোপ পায় এবং বাচ্চা ধারণ করলেও গর্ভকালীন ভ্রূণের মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি কথা হল, এই সুপরিচিত সবুজ সবজিটির অনেক ঔষধি গুণাগুণের পাশাপাশি অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও বিদ্যমান। যা নিয়মিত খেলে আমাদের শরীর দিনদিন অসুস্থ হয়ে যেতে পারে।
লিভারের ক্ষতিসাধন
অতিরিক্ত ধনেপাতা খেলে এটি লিভারের কার্যক্ষমতাকে খারাপভাবে প্রভাবিত করে থাকে। এতে থাকা এক ধরনের উদ্ভিজ তেল শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আক্রান্ত করে ফেলে। এছাড়া এটাতে এক ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে যেটা সাধারণত লিভারের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে কিন্তু দেহের মাঝে এর অতিরিক্ত মাত্রার উপস্থিতি লিভারের ক্ষতিসাধন করে।
নিম্ন রক্তচাপ
অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়ার ফলে দেহের হৃৎপিন্ডের স্বাস্থ্য নষ্ট করে ফেলে, যার ফলে নিম্ন রক্তচাপ সৃষ্টি করে। বিশেষজ্ঞরা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এই ধনেপাতা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাই এটি অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে নিম্ন রক্তচাপের উদ্ভব ঘটতে পারে। এছাড়া এটি হালকা মাথাব্যথারও উদ্রেক করতে পারে।
পেট খারাপ
স্বাভাবিকভাবে ধনেপাতা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল বিষয়ক সমস্যা দূর করে থাকে কিন্তু বেশি পরিমাণে ধনেপাতা সেবন পাকস্থলীতে হজমক্রিয়ায় সমস্যা তৈরি করে থাকে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে এক সপ্তাহে ২০০ এমএল ধনেপাতা আহারে গ্যাসের ব্যথা ওঠা, পেটে ব্যথা, পেট ফুলে ওঠা, বমি হওয়া হওয়ারও সম্ভাবনা দেখা যায়।
ডায়রিয়া
ধনেপাতা অল্প খেলে পেটের সমস্যা দূর হয় কিন্তু এটি বেশি পরিমাণে খেলে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। এছাড়া এর ফলে ডিহাইড্রেশন হতে থাকে। ফলে ডায়রিয়ার সমস্যাটি হতেই থাকে। তাই এই ধরনের সমস্যা এড়াতে প্রতিদিনের খাবারে ধনেপাতা কম পরিমাণে ব্যবহার করুন।
নিঃশ্বাসের সমস্যা
আপনি যদি শ্বাসকষ্টের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে এই ধনেপাতা আহার থেকে বিরত থাকুন। কেননা এটি আপনার শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা করে থাকে যার ফলে ফুসফুসে অ্যাজমার সমস্যা হতে পারে। এই ধনেপাতা খেলে মাঝে মাঝে ছোট ছোট নিশ্বাস নিতেও সমস্যা তৈরি হয়।
বুকে ব্যথা
অতিরিক্ত ধনেপাতা আহারে বুকে ব্যথার মত জটিল সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এটা শুধুমাত্র অস্বস্তিকর ব্যথাই সৃষ্টি করে না তা দীর্ঘস্থায়ীও হয়ে থাকে। এজন্য এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে দৈনন্দিন আহারে কম করে এই ধনেপাতা খেতে পারেন।
ত্বকের সংবেদনশীলতা
সবুজ ধনেপাতাতে মোটামুটিভাবে কিছু ঔষধি অ্যাসিডিক উপাদান থাকে যেটি ত্বককে সূর্যরশ্মি থেকে বাঁচিয়ে সংবেদনশীল করে থাকে। কিন্তু অতিরিক্ত সেবনে সূর্যের রশ্মি একেবারেই ত্বকের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না ফলে ত্বক ভিটামিন কে থেকে বঞ্চিত হয়। এছাড়া ধনেপাতা ত্বকের ক্যান্সার প্রবণতাও তৈরি করে থাকে।
অ্যালার্জীর সমস্যা
ধনেপাতার প্রোটিন উপাদানটি শরীরে আইজিই নামক অ্যান্টিবডি তৈরি করে যা শরীরের বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানকে সমানভাবে বহন করে থাকে। কিন্তু এর অতিরিক্ত মাত্রা উপাদানগুলোর ভারসাম্য নষ্ট করে ফেলে। ফলে অ্যালার্জীর তৈরি হয়। এই অ্যালার্জীর ফলে দেহে চুলকানি, ফুলে যাওয়া, জ্বালাপোড়া করা, র্যা শ ওঠা এই ধরনের নানা সমস্যা হয়ে থাকে।
প্রদাহ
অতিরিক্ত ধনেপাতা সেবনের আরেকটি বিশেষ পার্শ্ব প্রতক্রিয়া হল মুখে প্রদাহ হওয়া। এই ঔষধিটির বিভিন্ন এসিডিক উপাদান যেটি আমাদের ত্বককে সংবেদনশীল করে থাকে পাশাপাশি এটি মুখে প্রদাহেরও সৃষ্টি করে। বিশেষ করে এর ফলে ঠোঁট, মাড়ি এবং গলা ব্যথা হয়ে থাকে। এর ফলে সারা মুখ লাল হয়েও যায়।
ভ্রূণের ক্ষতি
গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়া ভ্রূণের বা বাচ্চার শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকারক। ধনেপাতাতে থাকা কিছু উপাদান মহিলাদের প্রজনন গ্রন্থির কার্যক্ষমতাকে নষ্ট করে ফেলে যার ফলে মহিলাদের বাচ্চা ধারণ ক্ষমতা লোপ পায় এবং বাচ্চা ধারণ করলেও গর্ভকালীন ভ্রূণের মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে।
ঘরে তৈরি জাদুকরী ক্রিম ঝরিয়ে দেবে বাড়তি মেদ, মাত্র ৭ দিনেই!
বাজারে মেদ কমানোর জন্য নানান রকমের ক্রিম কিনতে পাওয়া যায়। পেট বা বাহুর মত শরীরের যেসব অংশে মেদ কমানো কষ্টকর, এসব ক্রিম সেই সব স্থানে ব্যবহারের জন্যই। যদিও চিকিৎসকেরা বলেন এগুলো ব্যবহার করা খুবই ক্ষতিকর। তাহলে উপায়? উপায় হচ্ছে নিজের ঘরেই একদম স্বল্প খরচে মেদ কমানোর ক্রিম বানিয়ে নিন। হ্যাঁ, একদম ঠিক শুনেছেন। আপনি চাইলে মাত্র ৩টি উপাদান দিয়ে নিজের ঘরেই বানিয়ে নিতে পারেন একটি জাদুকরী ক্রিম আর পেতে পারেন নিজের পছন্দের ফিগার! মাত্র ৭ দিন ব্যবহারেই ফলাফল পেতে শুরু করবেন এবং প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি বলে এর কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই।
প্রকৃতির কাছে আছে সব সমস্যার সমাধান। তাই মেদ কমানোর কাজেও আমরা নেব প্রকৃতির আশ্রয়।
যা যা লাগবে
১০০ এম এল বেবি ক্রিম (সদ্য জন্মানো শিশুদের ব্যবহারের জন্য যে ক্রিম। ভালো দেখে নামকরা ব্রান্ডের নেবেন।)
২০ ফোঁটা অরেঞ্জ বা লেমন এসেনশিয়াল অয়েল
২-৫ ফোঁটা দারুচিনির এসেনশিয়াল অয়েল
প্রণালি
-
একটি কাঁচের কৌটায় ক্রিম নিন। এর সাথে বাকি দুটি এসেনশিয়াল অয়েল যোগ করুন। মিশিয়ে নিন।
-এরপর ৭ থেকে ১২ ঘণ্টা ক্রিমটি এভাবেই রেখে দিন। নির্দিষ্ট সময় পর আরও একবার ভালো করে মেশান। ব্যাস, তৈরি আপনার ক্রিম।
- এই ক্রিম এক মাস পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারবেন। এরপর নতুন করে তৈরি করতে হবে। তবে এক মাসের আগে শেষ করে ফেলাই ভালো।
-সূর্যের আলো থেকে দূরে মুখ বন্ধ কাঁচের যারে সংরক্ষণ করুন।
ব্যবহার প্রণালি
-ক্রিমটি নিয়ম করে প্রতিদিন গোসলের পর ব্যবহার করুন।
-যেসব স্থানে মেদ কমাতে চান, সেসব অঞ্চলে ক্রিমটি ভালো করে ম্যাসাজ করুন। দেহে ময়েশ্চারাইজারের কাজও করবে এই ক্রিম।
-ক্রিম ব্যবহারের পর সেইদিন আর গোসল করবেন না। তাতে উপকারিতা কমে যাবে।
মনে রাখুন
এই ক্রিমটি যেসব স্থানের মেদ কমানোর জন্য কার্যকর, যেসব স্থানে ত্বকের নিচে জমা মেদ কমানো খুবই কষ্টকর। যেমন থাই, হিপ, বাহু, পেট ইত্যাদি এলাকায়। মেদ কমিয়ে এই ক্রিমটি ত্বককেও সুন্দর করে তোলে। তবে বুকে বা স্তনে এই ক্রিম ব্যবহার করবেন না। বা শরীরের কোন অভ্যন্তরীণ অঙ্গে ব্যবহার করবেন না।
বেবি ক্রিম অন্য যে কোন ক্রিমের তুলনায় আমাদের জন্য নিরাপদ। আর কমলা বা লেবুর মত টক জাতীয় ফলের এসেনশিয়াল অয়েল ত্বকের নিচে জমে থাকা মেদ কমাতে অত্যন্ত কার্যকর। দারুচিনির এসেনশিয়াল অয়েল এমনিতেই কার্যকরী বস্তু, আর কমলা বা লেবুর সাথে মিলে এতই হয়ে ওঠে আরও কার্যকর!
প্রকৃতির কাছে আছে সব সমস্যার সমাধান। তাই মেদ কমানোর কাজেও আমরা নেব প্রকৃতির আশ্রয়।
যা যা লাগবে
১০০ এম এল বেবি ক্রিম (সদ্য জন্মানো শিশুদের ব্যবহারের জন্য যে ক্রিম। ভালো দেখে নামকরা ব্রান্ডের নেবেন।)
২০ ফোঁটা অরেঞ্জ বা লেমন এসেনশিয়াল অয়েল
২-৫ ফোঁটা দারুচিনির এসেনশিয়াল অয়েল
প্রণালি
-
একটি কাঁচের কৌটায় ক্রিম নিন। এর সাথে বাকি দুটি এসেনশিয়াল অয়েল যোগ করুন। মিশিয়ে নিন।
-এরপর ৭ থেকে ১২ ঘণ্টা ক্রিমটি এভাবেই রেখে দিন। নির্দিষ্ট সময় পর আরও একবার ভালো করে মেশান। ব্যাস, তৈরি আপনার ক্রিম।
- এই ক্রিম এক মাস পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারবেন। এরপর নতুন করে তৈরি করতে হবে। তবে এক মাসের আগে শেষ করে ফেলাই ভালো।
-সূর্যের আলো থেকে দূরে মুখ বন্ধ কাঁচের যারে সংরক্ষণ করুন।
ব্যবহার প্রণালি
-ক্রিমটি নিয়ম করে প্রতিদিন গোসলের পর ব্যবহার করুন।
-যেসব স্থানে মেদ কমাতে চান, সেসব অঞ্চলে ক্রিমটি ভালো করে ম্যাসাজ করুন। দেহে ময়েশ্চারাইজারের কাজও করবে এই ক্রিম।
-ক্রিম ব্যবহারের পর সেইদিন আর গোসল করবেন না। তাতে উপকারিতা কমে যাবে।
মনে রাখুন
এই ক্রিমটি যেসব স্থানের মেদ কমানোর জন্য কার্যকর, যেসব স্থানে ত্বকের নিচে জমা মেদ কমানো খুবই কষ্টকর। যেমন থাই, হিপ, বাহু, পেট ইত্যাদি এলাকায়। মেদ কমিয়ে এই ক্রিমটি ত্বককেও সুন্দর করে তোলে। তবে বুকে বা স্তনে এই ক্রিম ব্যবহার করবেন না। বা শরীরের কোন অভ্যন্তরীণ অঙ্গে ব্যবহার করবেন না।
বেবি ক্রিম অন্য যে কোন ক্রিমের তুলনায় আমাদের জন্য নিরাপদ। আর কমলা বা লেবুর মত টক জাতীয় ফলের এসেনশিয়াল অয়েল ত্বকের নিচে জমে থাকা মেদ কমাতে অত্যন্ত কার্যকর। দারুচিনির এসেনশিয়াল অয়েল এমনিতেই কার্যকরী বস্তু, আর কমলা বা লেবুর সাথে মিলে এতই হয়ে ওঠে আরও কার্যকর!